ইউরোপে জ্বালানী তেলের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধের প্রচারণা

জীবাশ্ম জ্বালানী কোম্পানীসমূহের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, এগুলোকে ক্ষতিহীন হিসেবে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাদের প্রচেষ্টাকে ঘিরে সর্বদা আবর্তিত হয়েছে বাগাড়ম্বরপূর্ন যোগাযোগ কৌশল। গত মাসে আমি ডজন খানেক ইউরোপীয় দেশ থেকে আগত কর্মীদের সাথে যোগ দেই রট্টারড্যামে অবস্থিত শেল কোম্পানীর পার্নিস রিফাইনারি ঘিরে যান চলাচল রুদ্ধ করার বিক্ষোভে। বয়া ও কায়াকের একটি ছোট ফ্লোটিলা ব্যবহার করে আমরা এটা করি। জীবাশ্ম জ্বালানীর বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার দাবিতে আমরা এই প্রচারনা চালাই।
প্রায় ৪০ জন ‘কায়াকিস্ট’ বন্দরের প্রবেশপথে অবরোধ গড়ার চেষ্টা করে। এতে জীবাশ্ম জ্বালানী ইন্ডাষ্ট্রি থেকে প্রথম প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। সত্য বিষয়টি হচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানী সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধের জন্য আমাদের প্রচারনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। আহত জন্তুর মতো ক্রুদ্ধ ভাব সৃষ্টি হয়। এতে আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, জীবাশ্ম জ্বালানী ইন্ডাষ্ট্রি পিআর- এর উপর নির্ভরশীল, যা জনগনকে বিভ্রান্ত করছে।
যুগ যুগ ধরে এই ইন্ডাষ্ট্রি নিজেদের রক্ষার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। আমরা জানি যে, সত্তরের দশকে তেল কোম্পানীগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। তাদের নিজেদের বিজ্ঞানীরা তাদেরকে এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি তারা অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহন না করেন, তবে তাদের পণ্যসমূহ শীগগিরই এই উপগ্রহকে বিপজ্জনকভাবে উত্তপ্ত করে তুলবে।
কিন্তু এসব কোম্পানী তাদের বিজ্ঞানীদের চেয়ে তাদের অর্থনৈতিক ও পিআর উপদেষ্টাদের কথা বেশী শোনার পন্থা বেছে নিয়েছে। তারা টাকা বানানোর জন্য প্রমানাদিকে সমাধিস্ত করেছে এবং ঘনীভূত বিপর্যয়ের ব্যাপারে নীরব রয়েছে। গত মাসে গ্রীনপীস একটি নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যাতে দেখা গেছে, ইউরোপের ৬ টি শীর্ষ জ্বালানী কোম্পানী দুই তৃতীয়াংশ বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এরাই আবার তথাকথিত ‘গ্রীন’ বিজ্ঞাপনের দ্বারা মানুষের চোখে ধূলো দেয়ার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button