সিরীয় বিদ্রোহীদের সাহায্য বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে লড়াইরত বিদ্রোহীদের সাহায্য দেয়া বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। মার্কিন একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, পশ্চিমা-সমর্থিত বিদ্রোহী গ্রুপ ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’র কয়েকটি ঘাঁটি নতুন গঠিত ইসলামী ফ্রন্টের যোদ্ধারা দখল করে নেবার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ দু’টো।
তিনি জানান, সামরিক সাজ-সরঞ্জাম, ঔষুধপত্র্র, যানবাহন এবং যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য যে সব উপকরণ বিদ্রোহীদের এতদিন সরবরাহ করা হয়েছে, তা আর দেয়া হবে না।
কেননা, এইসব সাহায্য ইসলামী চরমপন্থীদের হাতে চলে যাবার আশঙ্কা আছে বলে তারা মনে করেন।
তবে, সেই মুখপাত্র এটিও জানিয়েছেন যে, মানবিক সাহায্য আগের মতই দেওয়া হবে। কেননা জাতিসংঘসহ সরকারী, বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই মানবিক সাহায্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
ইসলামিক ফ্রন্ট নামের একটি মোর্চার সেনারা গত সপ্তাহে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির যোদ্ধাদেরকে তুরস্ক সংলগ্ন বাব আল-হাওয়া সীমান্ত থেকে হটিয়ে দেবার পরই ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সদস্যদেরকে সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেবার ঘোষণাটি এসেছে।
অ্যামেরিকা ও ব্রিটেন আশঙ্কা করছে, যেহেতু উত্তরাঞ্চল থেকে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সেনাদের হটিয়ে দিয়ে সেই এলাকায় ইসলামিক ফ্রন্টের যোদ্ধারা নিয়ন্ত্রন নেবার চেষ্টা করছে, ফলে, তাদের পাঠানো এসব সহায়তা হয়তো এখন ইসলামী চরমপন্থীদের হাতে চলে যেতে পারে।
হোয়াইট হাউসের সহকারী প্রেস সচিব বলেছেন, বাব-আল-হাওয়ায় উদ্ভুত পরস্থিতিতে তারা এখনো তথ্য সংগ্রহ করছে।
তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সিরিয় বিদ্রোহীদের নেতা জেনারেল ইদ্রিসের সাথে এবং সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের সদস্যদের সাথে তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তারা যতদূর জানে তাদের পাঠানো কোনো সহায়তা ইসলামী চরমপন্থীদের হাতে পৌঁছেনি। কিন্তু এরপরেও, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের প্রকৃত পরিস্থিতি ভালো করে যাচাই করা পর্যন্ত সহায়তা বাতিলেরে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য লড়তে থাকা ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে সরাসরি মারণাস্ত্র দেবার কথাটি বরারবরই অস্বীকার করে এসেছে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো।
অস্ত্র সরবরাহ না করার পেছনে কারণ হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, আল-কায়েদাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জিহাদী গ্রুপের হাতে হয়তো সেইসব অস্ত্র চলে যেতে পারে।
তবে, অভিযোগ রয়েছে, বিদ্রোহীদের কাছে গোপনে অস্ত্রের চালান পাঠানোর ক্ষেত্র্রে পশ্চিমা মিত্ররা সহায়তা করেছে।
সিরিয়ায় নেতৃস্থানীয় সাতটি বিদ্রোহী দল মিলে গত মাসে গঠন করে ইসলামিক ফন্ট্র নামের এই মোর্চা। চরমপন্থায় বিশ্বাসী এই মোর্চা সিরিয়ায় ইসলামী শাসন কায়েম করতে চায়।
তবে, আগে এরাও ফ্রি সিরিয়ান আর্মিরই সহযোগী বাহিনীগুলোর সদস্য ছিলো, পরবর্তীতে মতানৈক্যের জের ধরে দুই মতাদর্শের সেনারা আলাদা আলাদা শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়।