বাংলা ভাষা ও ইশারা বুঝবে সাদলী ও সৌমেনের রোবট
আমাদের প্রিয় মাতৃভাষার জন্য একদিন আমাদের দেশের সাহসী সন্তানেরা জীবন দিয়েছিলেন। আজকের দিনেও অনেক তরুণ কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাভাষা নিয়ে।
তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ছাত্র সাদলী সালাহউদ্দিন ও সৌমিন ইসলাম তৈরি করে দেখিয়েছেন সম্পূর্ণ বাংলা কথা বুঝতে ও ইশারায় চলতে সক্ষম রোবট।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় রোবট নিয়ে কাজের ক্ষেত্র চাহিদা না থাকলেও কাজ যে হয়না তা নয়। তবে বাংলা কথা বুঝবে, ইশারায় চলাফেরা করবে এরকম রোবট তৈরির কাজ এই প্রথম।
রোবটটিকে বাংলায় যেকোন নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে সক্ষম। যারা বাক প্রতিবন্ধী বা কথা বলতে অক্ষম তাদের জন্যও রোবটটিতে যোগ করা হয়েছে বিশেষ সংবেদনশীল ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে রোবটটিকে ইশারা করলেই সে অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।
রোবটটি প্রদর্শনকালে বাংলা শব্দ ডানে যান, বামে যান, থামুন, এবার চলুন এসমস্ত আদেশের মাধ্যমে কিভাবে কাজ করছে তা দেখানো হয়।
প্রকল্পটি তৈরীর কাজে নিয়োজিত দলের সদস্যরা জানান, রোবটটিকে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ইন্টারনেটে প্রবেশ করে একটা সফটওয়্যার এর মাধ্যমে প্রথমে একটি নিরাপত্তা কোডের মাধ্যমে রোবটটির সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এরপর রোবটটি থেকে একটা নিশ্চয়তামূলক বার্তা আসলেই কাজ শেষ। রোবটটি কাজ শুরু করবে।
নিয়ন্ত্রণকারী দূরে অবস্থানকারী ব্যক্তির কাছে রোবটটির আশেপাশের পরিবেশের জীবন্ত ভিডিও পাঠাতে থাকবে প্রতি মূহূর্তে। ভিডিওগুলো দেখে নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেবে কখন কী করতে হবে। সাথে সাথে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) এর মাধ্যমে রোবটটি স্যাটেলাইটের সাথে সংযোগ করতে পারবে। ফলে মানচিত্রের মাধ্যমেও রোবটটির অবস্থানও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শিক্ষকদের উদ্যোগে এ প্রকল্পটি নিয়ে মঙ্গলবার রুয়েট ক্যাম্পাসে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
রুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের প্রধান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম শেখ জানান, এ প্রকল্পটি যদি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা যায় তবে বাংলাদেশের বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে।
অধ্যাপক রফিকুল শেখ এটি নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রুয়েট উপাচার্য ড. মর্ত্তুজা আলী বলেন, আসলেই এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। বাংলা ভাষায় কাজ করতে সক্ষম রোবট আবিষ্কার সত্যিই আমাদের গর্বের বিষয়।