একদলীয় ও ভোটারবিহীন নির্বাচন দেশবাসী মেনে নেবে না : রামু আ. লীগ সভাপতি
রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় নির্বাচন প্রচেষ্টার কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রচেষ্টা এখন দেশে বিদেশে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে। এরকম নির্বাচন দেশবাসি কখনো মেনে নেবে না। নির্বাচন হতে হবে সকল দল নিয়ে।
তিনি সোমবার সকাল ৯টার দিকে রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনসার, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। বক্তৃতাকালে সোহেল সরওয়ার কাজল নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করতে শুরু করলে উপস্থিত শত শত মানুষ হাততালি দিয়ে তার বক্তব্য সমর্থন করেন।
তিনি গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা করে বলেন, অতিউৎসাহি ব্যক্তি গণজাগরণ মঞ্চের নামে রাজপথ দখল করে যানজট ও অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি হেফাজতে ইসলামের নামে আলেম-ওলামাগণ অরাজকতা করলে তাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজলের সরকারবিরোধী বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আসা অনেকে হতবাক হন। এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা-সমালোচনাও শুরু হয়েছে। জেলাজুড়ে এই খবর ছিল মানুষের মুখে মুখে। এদিকে সোহেল সরওয়ার কাজলের সরকারবিরোধী বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি তপন মল্লিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম জানিয়েছেন, বিগত নির্বাচনেও সোহেল সরওয়ার কাজল মহাজোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন। মূলত তিনি বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া তার বক্তব্যে এরই সঠিক প্রতিফলন ঘটেছে। এ বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রামু উপজেলা বিএনপি সভাপতি আহমেদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা নেতাকর্মীদের কাছে বিষয়টি জেনেছেন।’ তিনি জানান, দেশের বর্তমান সহিংস পরিস্থিতিতে জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পেরে আবেগ তাড়িত হয়ে চেয়ারম্যান কাজল সাহসী এ বক্তব্য দিয়েছেন। সরকারের উচিৎ গনবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে এ লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। মহান বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ হোসেন।
এতে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রামু থানা পুলিশের পরিদর্শক অপ্পেলা রাজু নাহা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান মুসরাত জাহান মুন্নী প্রমূখ। এতে পুলিশ, বিভিন্ন মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে।
উল্লেখ্য সোহেল সরওয়ার কাজল রামুর বিখ্যাত রাজনীতিক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মরহুম ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর ছেলে। তার ছোটভাই সাইমুম সরওয়ার কমল সোনালী ব্যাংক কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ হারান। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রামু-কক্সবাজার আসন থেকে কমলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।