নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের খরচ বাবদ ইসির কাছে ২৬ কোটি টাকা চাইল স্বশস্ত্র বাহিনী
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ২৬ কোটি টাকার সম্ভাব্য খরচের বাজেট পাঠিয়েছে স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত চিঠি ইসি সচিবালয়ে পৌঁছেছে বলে ইত্তেফাককে নিশ্চিত করেছেন একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। যদিও অর্ধেকের বেশি আসনেই এবার ভোট গ্রহণের সুযোগ নেই। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কারণে ১৫৪টি আসনের প্রার্থীরা প্রাথমিকভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে এটা নিশ্চিত। তবে কবে থেকে তারা দায়িত্ব পালন করবেন তা এখনও ঠিক হয়নি। ১৯ ডিসেম্বরের পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে ফের আগামী ১৯ ডিসেম্বর বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তবে এবার বৈঠকে সব রিটার্নিং অফিসারদের রাখা হচ্ছে। ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত বৈঠক সংক্রান্ত এক চিঠি সশস্ত্র বাহিনী, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিজিবি, আনসার ভিডিপি, কোস্ট গার্ড, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা- এনএসআই, এসবি, ডিজিএফআই, র্যাবসহ সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে। কমিশন সচিবালয় থেকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি অডিটোরিয়ামে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এর সভাপতিত্বে সভায় সকল কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।’এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ইসি সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে ইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই কবে থেকে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হবে তা নির্ধারিত হবে। তবে কমিশন ২৬ নভেম্বর থেকে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। যেসব আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেখানেই সেনা মোতায়েন নাকি সারাদেশে মোতায়েন হবে সেটা এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানা গেছে। এর আগে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে ইসির কাছে দেড়শ কোটি টাকা চেয়েছিল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।
গত ১২ ডিসেম্বর সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, সেনাবাহিনীকে অ্যালার্ট রাখা হয়েছে। এযাবত্কালে প্রতিটি নির্বাচনেই সেনাবাহিনী ছিলো। এবারো সেনা বাহিনীকে মাঠে নামানো হবে। তাদের অ্যালার্ট করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও প্রস্তুত (রেডি) রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালের নবম সংসদ, ১৯৯৬ ষষ্ঠ সংসদ ও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে ৫ থেকে সেনাবাহিনী ৭ দিন মাঠে ছিল। রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ভোটের প্রচারণার সময় থেকে দুই সপ্তাহের বেশি সেনা মোতায়েন ছিল।
এর আগে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব মিলিয়ে প্রায় ১৬৬ কোটি টাকা খরচ হয়। আর এবার শুধু পুলিশ বাহিনী চেয়েছে প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা এবং স্বশস্ত্র বাহিনী চেয়েছে ২৬ কোটি টাকা। আগামী নির্বাচনে সব মিলিয়ে ৫০০ কোটি টাকা বাজেট নির্ধারিত আছে। এ বাজেটের ওপর আপত্তি জানিয়ে খরচ কমানোর পরামর্শও দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দশম সংসদ নির্বাচন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪জন নির্বাচিত হওয়ায় ১৪৬ আসনে নির্বাচন হবে। আর ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৩৮৬ জন প্রার্থী। ইত্তেফাক