রায়ের অপেক্ষায় ভারত-বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা মামলা
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে এ মামলার মৌখিক শুনানি শুরু হয়।আট দিন ধরে চলা এই শুনানি গতকাল বুধবার ( ১৮ ডিসেম্বর) শেষ হয়। আগামী বছরের জুনের দিকে এই মামলার রায় হবে।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মৌখিক এই শুনানিতে অংশ নিতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল নেদারল্যান্ডসে যান। প্রতিনিধি দলে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং সদ্য বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে দীপু মনি মামলায় দেশের পক্ষে প্রধান এজেন্ট হিসেবে মামলার শুনানিতে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী দুটি দেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির আলোচনা শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। দীর্ঘসময়ে বিরতি দিয়ে কয়েকটি বৈঠক হলেও এতে সমাধান হচ্ছিল না। এরপর দুই দেশের সম্পত্তিতেই বাংলাদেশ ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে নিয়ে যায়। জাতিসংঘের সমুদ্র সংক্রান্ত কনভেনশন আনক্লসের বিধান অনুযায়ী জার্মানির হামবুগের্র ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব দ্য ল অব দ্য সি’তে মায়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। ভারতের সঙ্গে মামলায় দ্য হেগের আদালতে ২০১১ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিক দাবি উত্থাপন করে বাংলাদেশ।
২০১২ সালের জুলাইয়ে পাল্টা দাবি উত্থাপন করে ভারত। বাংলাদেশ তার জবাব দেয় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি। এরপর বাংলাদেশের যুক্তি খণ্ডন করে গত ৩০ জুন লিখিত জবাব দাখিল করে ভারত। এরপর গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে সালিশি আদালতের একটি প্রতিনিধি দল সুন্দরবন সংলগ্ন বিরোধপূর্ণ জলসীমা পরিদর্শন করে। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জার্মানির ক্রিশ্চিয়ান রুডিজার উলফ্রাম, অস্ট্রেলিয়ার ইভান অ্যান্টনি শিয়ারার, ঘানার টমাস আবোয়াগি মেনসা এবং ফ্রান্সের জঁ পিয়ারকোট।
এদের মধ্যে টমাস আবোয়াগি মেনসা সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক আদালতের পরামর্শক। পিয়ারকোট সালিশি আদালতের বিচারক। বিচারক প্যানেলের অপর সদস্য হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইনজীবী প্রেমারাজু শ্রীনিবাসন।
গত বছরের ১৫ মার্চ ২৩ সদস্যবিশিষ্ট জার্মানির ইটলসে মায়ানমারের সঙ্গে মামলার রায় প্রকাশ হয়। ওই রায়ে বাংলাদেশের যুক্তি অনুযায়ী নায্যতার ভিত্তিতে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মায়ানমার-বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে দেয়। ওই রায়ে বাংলাদেশ ও মায়ানমার দুই দেশই সন্তোষ প্রকাশ করে। ভারতের সঙ্গে সালিশি আদালতের মামলাতেও তাই বাংলাদেশ ‘নায্যতাভিত্তিক’ রায় পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।