নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্রও
একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়ে দিয়েছে, তারা আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন সাকি এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদের অর্ধেকেরও বেশি আসন প্রতিদ্বন্দ্বিহীন হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি। সংলাপ অব্যাহত রাখার জন্য এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য কার্যকর সমাধান খোঁজে বের করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রধান দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। সব মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার সুযোগ বাংলাদেশের রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদের অর্ধেকেরও বেশি আসন প্রতিদ্বন্দ্বিহীন হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরবর্তী সময়ে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে পর্যবেক্ষণ উদ্যোগ নেয়ার জন্য দেশটি প্রস্তুত রয়েছে।
এতে বলা হয়, একটি অসহিংস ও ভীতিমুক্ত পরিবেশে নিজ জাতীয় প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং যারা নেতৃত্ব প্রদানের আকাঙ্খা পোষণ করেন-তাদের আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নির্বাচনে সব দলের অংগ্রহণ নিশ্চিতের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সব রাজনৈতিক দল ও বাংলাদেশী নাগরিকদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনুপ্রাণিত করে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে, সব দলের ও বাংলাদেশী নাগরিকদের অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে নিজ মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। এই মতামত প্রকাশের সুযোগ প্রদান করা সরকারের দায়িত্ব; একইভাবে, এই সুযোগ শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা বিরোধী দলের দায়িত্ব।
এর আগে গত রবিবার কমনওয়েলথ মহাসচিব এক চিঠিতে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। কমনওয়েলথ মহাসচিবের চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ এবং পরিবেশ না থাকায় তাঁরা ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন না।
একই কারণ দেখিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ক্যাথরিন অ্যাস্টনের মুখপাত্র ব্রাসেলসে থেকে এক বিবৃতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।