৫৯ জেলায় সেনা মোতায়েন
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার থেকে ৫৯ জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় এক ব্যাটালিয়ান করে সেনা সদস্য মোতায়েন থাকবে।
প্রতি ব্যাটালিয়ানে ৭৪০ জন করে ৫৯ জেলায় মোট ৪৩ হাজার ৬৬০ জন সেনা সদস্য মাঠে থাকবেন। সেনা সদস্যদের সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন আর্ম ফোর্স ডিভিশনের প্রধান লে. জেনারেল আবু বেলাল মোহম্মদ শফিউল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করবে। সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। তাদের সঙ্গে থাকবেন একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট। তবে বাকি ৫ জেলায় নিরাপত্তা দেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলাগুলো হলো- রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপর, চাঁদপুর ও জয়পুরহাট।
এছাড়া উপকূলীয় জেলাগুলোতে কোস্টগার্ডের সঙ্গে নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। জরুরি রসদ ও নির্বাচনী সামগ্রী পরিবহনে বিমান বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্দিষ্ট জেলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সেনা সদস্যরা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫৯ জেলায় সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন। লে. কর্নেল পদমর্যাদায় একজন কর্মকর্তার অধীনে থাকবে প্রতি জেলার সেনা সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকবেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রের অভ্যন্তর বা ভোট কক্ষে কোনো সেনাসদস্য প্রবেশ করতে পারবেন না।
সূত্র আরো জানায়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। পরে তারা স্ব স্ব ব্যারাকে ফিরে যাবে। কিছুদিন আগে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ২৬ ডিসেম্বর থেকে সেনাবাহিনী মাঠে নামবে। সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা থাকবে প্রায় ৫০ হাজার। আর অন্যান্যা সংস্থার সদস্য থাকবে সাড়ে ৫ লাখ।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে এজন্য একটি সেল গঠন করা হবে। সেনা, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার একজন করে প্রতিনিধি এই সেলে থাকবেন। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় সমন্বয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজের সমন্বয় করবেন।
বিজিবি-র্যাব-পুলিশ ও আনসারদের নিয়ে গঠিত যৌথবাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আসছে।২৮ ডিসেম্বর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান চালানো হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছে ২৭ ডিসেরের মধ্যে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে হবে। অন্যাথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো এবং জেলা থেকে উপজেলা ও উপজেলা থেকে ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হতে পারে।