লন্ডন মহানগর বিএনপি‘র উদ্যোগে স্বাধীনতার প্রত্যাশা ও আজকের রক্তাক্ত বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনার
লন্ডন মহানগর বিএনপি‘র উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার প্রত্যাশা ও আজকের রক্তাক্ত বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা কখনো অতিপত্যবাদীদের কাছে মাথানত করবে না। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৭১’র এর স্বাধীনতা আন্দোলনসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বাংলাদেশীরা স্বগৌরবে মাথা উচু করে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। বক্তারা বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পিতার বাকশালকেও হার মানিয়েছে। পাশ্ববর্তী একটি দেশের সাথে গোপন চুক্তি করে দেশের স্বাধীনতা স্বাবভৌমত্ব বিপন্ন করে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। দেশবাসী বাকশালী কায়দায় এক দলীয় নির্বাচন মেনে নিবে না। এই নির্বাচন দেশে বিদেশে কোথাও গ্রহনযোগ্য হবে না। বক্তারা ক্ষমতাশীন অবৈধ সরকারকে গণ আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
গত ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন লন্ডন মহানগর বিএনপি সভাপতি মো: তাজুল ইসলাম। মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এনুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. মুজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সাবেক উপদেষ্টা মুখলেছুর রহমান চৌধুরী। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য বিএনপি‘র সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপি‘র সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শরিফুজ্জামান চৌধুরী তপন।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশনেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সভাপতি গোলাম রাব্বানী, সহ সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম, এডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, হেলাল নাসিমুজ্জামান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট খলিলুর রহমান, লন্ডন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রোমান আহমদ চৌধুরী, এস এম লিটন, দেলোয়ার হোসেন দিলু, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত বাদশা, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ যুব সম্পাদক আফজাল হোসেন, যুক্তরাজ্য জাসাস সভাপতি এম এ সালাম, সহ সভাপতি লিটন শওকত, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমদ, জাসাস কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুর রহমান, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এমদাদ হোসেন টিপু, সদস্য সচিব আবুল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মিছবাউজ্জামান সোহেল, সিলেট জেরা ছাত্রদলের সহ সভাপতি নিজাম উদ্দিন আহমদ, বিএনপি নেতা দেওয়ান আব্দুল বাছিত, মৌলানা শামীম আহমদ, যুবদল নেতা শামীম তালুকদার, আবুল হাসনাত রিপন, তরুন দলের আহবায়ক বাছির আহমদ খাঁন, যুগ্ম আহবায়ক তোফায়েল আলম, ইমিগ্রেশন এডভাইজার কুমকুম আক্তার, মহানগর বিএনপি নেতা আকবর হোসেন, ফারুক হোসেন, প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, এখন পাকিস্তানিরা না থাকলেও তাদের চেয়েও বড় পরোক্ষ শক্তির দখলে চলে যাচ্ছে দেশ। তখন সব শিল্পকারখানার মালিক ছিল পাকিস্তানিরা। এখন বাজার ছেয়ে গেছে ভারতীয় পণ্যে। দেশের করপোরেট অফিসগুলো অনেকাংশেই ভারতীয়দের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এখন নির্বাচিত সরকারের আড়ালে যে স্বৈরশাসন চলছে তা আইয়ুব-ইয়াহিয়ার শাসনকেও হার মানায়। একদলীয় প্রহসনের নির্বাচন স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী। সেমিনারে বক্তারা বলেন ১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও শত্রুর চক্রান্ত থেমে নেই। আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। অপশক্তির নীলনকশা বাস্তবায়নে এদেশেরই কিছু চিহ্নিত মহল মদদ যুগিয়ে চলেছে। ওদের হাত থেকে মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে হলে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান না হলে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথায় পর্যবসিত হবে, যা কারো কাম্য নয়।