হত্যা, সহিংসতার পথ পরিহার করে সমঝোতার পথে আসুন
বিডিআর বিদ্রোহের সাথে খালেদা জিয়া জড়িত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গোপালগঞ্জের নাম মুছে ফেলার আগে সময়েই বলে দেবে কার নাম মুছে যাবে। বিএনপি-জামায়াত জোট এবং খালেদা জিয়া বিডিআর বিদ্রোহের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ সন্ত্রাসী, পাকিস্তানি তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদে ছেয়ে যাবে বাংলাদেশ। তাই শান্তির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। আমি দেশে এলে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। দেশে ৭২-এর সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হবে। যুদ্ধাপরাধীদের রায় ও বিচার দ্রুত কার্যকর করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের টুকুরিয়া চৌপথি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভা এবং শ্বশুড়বাড়িতে কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাকে আবারো ভোট দিলে আমি ক্ষমতায় যেতে পারলে টুকুরিয়া চৌপথি উচ্চ বিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করব। তিনি বলেন, আমি ক্ষমতায় গেলে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করব।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হত্যা, সহিংসতার পথ পরিহার করে সমঝোতার পথে আসুন। উনি (খালেদা জিয়া) জামায়াতকে ছাড়া চলতে পারে না। জামায়াতকে তিনি ক্যাডার বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেন। মিঠাপুকুরে কাদের মোল্লার ফাঁসির দিন ১২ কিলোমিটার জায়গায় বিএনপি জামায়াত রাস্তার গাছ কেটে অবরোধ করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। খালেদা জিয়া খুনের রাজনীতি করে। ধ্বংসের রাজনীতি করে। জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি করে। তার পরিবহনে আগুন দিয়ে ড্রাইভার যাত্রীদের মারে। পথের শিশুদের মারে। তাদের হাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদ নয়। বিএনপি জামায়াতের দোসর।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই শান্তি। সংবিধান অনুযায়ী আমরা কাজ করতে চাই। সংবিধানের বাইরে আমি যাব না। আমি আবার ক্ষমতায় এলে দেশে ৭২-এর সংবিধান প্রতিষ্ঠা করব।
শেখ হাসিনা তার সরকারের সময়ে যুব,নারী, শিক্ষা, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাকে নৌকা মাকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। ৫ তারিখে স্বতঃস্ফুর্তভাবে ভোট দিন। কাউকে ভয় পাবেন না।
বেলা দেড়টা থেকে দুপুর ২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত টানা ৪০ মিনিট বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। এর আগে সৈয়দ পুর বিমানবন্দরে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে তিনি বেলা সাড়ে ১২টায় অবতরণ করার পর সড়কপথে জনসভা স্থলে যান।
টুকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এডভোকেট ফজলে রাব্বী এমপি, জেলা সেক্রেটারী এ্যডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, উপজেলা সভাপতি মোতাহারুল হক বাবলু, সেক্রেটারী তাজিমুল ইসলাম শামীম প্রমুখ। পরে তিনি পীরগঞ্জের লালদীঘিতে তার শ্বশুড় বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে প্রয়াত স্বামী, শ্বশুড়-শাশুড়ীর কবর জিয়ারত ও মোনাজাত করেন। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। কর্মীসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোপালগঞ্জের নাম মুছে ফেলার আগে সময়েই বলে দেবে কার নাম মুছে যাবে। বিডিআর বিদ্রোহের সাথে খালেদা জিয়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। সব কিছুর বিচার করা হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এসময় তিনি কর্মীদের সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের জন্র মাঠে থেকে ভোট চাওয়ার নির্দেশ দেন। যারা নির্বাচন প্রতিহত করতে আসবে তাদেরকেও প্রতিহত করার নির্দেশ তিনি।
জনসভার আগে বেরা ১১ টায় স্থানীয় বড় দরগা এবং জাহাঙ্গীরাবাদে পৃথক দুটি পথসভায় বক্তব্য দেয়ার কথা থাকলেও কুয়াশার কারনে তিনি আসতে বিলম্ব হয় পথসভা দুটি বাতিল করা হয়। বেলা পৌনে তিনটায় তিনি জয় সদন ত্যাগ করে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন।