শেখ হাসিনার বিদায় হবেই : মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন

London১৮ দলীয় ঐক্যজোট যুক্তরাজ্য শাখার উদ্যোগে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ ২৯ ডিসেম্বর রোববার লন্ডনের ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। সহশ্রাধিক প্রতিবাদী জনতার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে ১৮ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ মার্চ ফর ডেমোক্রেসীতে সরকারের বাঁধা প্রদান, বেগম জিয়ার বাসভবন ঘেরাও, তাকে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করতে না দেয়া, শান্তিপূর্ণ মার্চে বিভিন্ন স্থানে হামলা ও নির্যাতন, পুলিশের গণ গ্রেফতার, সুপ্রীম কোর্ট এবং জাতীয় প্রেসক্লাবে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের সকল অধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন কায়েম করার যে দুঃস্বপ্ন দেখছেন দেশের প্রতিবাদী জনতা সেটা সফল হতে দেবে না। বক্তারা নির্যাতনের পথ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় পৃথিবীর কোথাও তোমার জায়গা হবে না। গণতন্ত্র হরণকারী হিসেবে যেখানেই যাবে সেখানে প্রতিরোধ করা হবে।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে, সেক্রেটারী কয়সর এম আহমদ এবং জামায়াত নেতা মাহিম মজুমদার এর পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামা উইরোপের আমীর আল্লামা মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন।
বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মুহিদুর রহমান, জামায়াতে ইসলামী ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, বিশিষ্ট আইনজীবী সেইভ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক, খেলাফত মজলিস ইউকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদির সালেহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শুইয়াব আহমদ, জমিয়তে উলামা ইউকের সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ তামিম আহমদ/
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন শেখ হাসিনার শতাব্দীর ঘৃণিত স্বৈরাচারীনি এবং গণতন্ত্র হরণকারী উল্লেখ করে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, বেগম জিয়ার মার্চ ফর ডেমোক্রেসীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা দিয়ে তোমাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছো। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার সাথে কোন ধরনের অশালিন আচরণ করা হলে দেশ প্রেমিক জনতা সেটা সহ্য করবে না। তিনি গণতন্ত্র পুণরোদ্ধারে বেগম জিয়ার ডাকে জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহিদুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ মার্চফর ডেমোক্রেসীতে বাঁধা দিয়ে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে। তাই গণতন্ত্র হরণকারী আওয়ামালীগকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে দিতে দেশপ্রেমিক শক্তিকে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বলেন, শেখ হাসিনা পিতার পথ ধরে হাটছেন এবং বাংলাদেশের মানুষের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র হরণ করে পুলিশ দিয়ে জনগণকে হত্যা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার দুঃস্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু পিতার মত তার স্বপ্নও কখনো পূরণ হবে না। তিনি বলেন, ভারত ব্যতিত কেউ পাশে নেই। গণতন্ত্র হরণকারী শেখ হাসিনাকে পৃথিবী বিদায় জানিয়েছে, এখন দেশের সাধারণ জনগণও প্রস্তুত তাকে ‘গুডবাই’ জানাতে।
ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা আইনের শাসন গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না বলেই বাংলাদেশের সুপ্রীমকোর্টে প্রকাশ্য হামলা চালিয়ে তার গণতন্ত্রের নমুনা দেখিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, লাটি নিয়ে হামলা করবে আওয়ামীলীগ এটা প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়ে করেছে। তিনি বলেন, আজ তোমরা যা করেছে তার বিচার একদিন না একদিন হবেই। তোমাদের বাংলার মানুষ কখনো ক্ষমতা করবে না।
এম এ মালেক আওয়ামীলীগ এবং শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্র হরণের খলনায়িকা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে ইউরোপের সব জায়গায় প্রতিরোধ করতে জাতীয়তাবাদী ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তি ঐক্যবদ্ধ। যেখানেই হাসিনা এখন থেকে সেখানেই প্রতিরোধ।
অধ্যাপক আব্দুল কাদির সালেহ বলেন আওয়ামীলীগ সুপ্রীমকোর্টে প্রকাশ্য হামলা  ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায় এবং জঘন্য বর্বরতা উল্লেখ করে বলেন, তারা  যে নারকীয়তা দেখিয়েছে সেটার কোন ক্ষমা হবে না। আওয়ামীলীগ যদি মনে করে ক্ষমতা ব্যবহার করে মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে তারা পার পেয়ে গেছে তবে সেটা ভূল। বাংলাদেশের জনগণকে  হত্যাকান্ডের জন্য বেশী প্রমাণ খুব বেশী খুঁজতে হবে না। প্রমাণের যত উপকরণ সব কিছু আছে। পরিকল্পিত  খুনের দায়ে নির্দেশ-দাতার চরম দন্ড হবে এবং দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ তা বিশ্বাস করে।
মাওলানা শুইয়াব আহমদ, বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষের গণতন্ত্রকে যেভাবে হরণ করা হচ্ছে সেটা পৃথিবীর কোঁথাও দেখা যাবে না। বাংলাদেশে মানুষের জীবন এখন অত্যাচারী শাসকের বুলেটের মুখে পড়ে আছে। রাস্তায় পুলিশ দিয়ে গুলি করে জনতাকে হত্যা করছে, দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র, ধর্মপ্রাণ মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়, সে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের কথা বলা হাস্যকর। শেখ হাসিনা দেশে দুর্বৃত্তদের শাসন চালাচ্ছেন। কিন্তু তার মনে রাখা উচিত পৃথিবীর কোন অত্যাচারীরই পরিণতি ভাল হয়নি এবং এক মাঘে কখনো শীত যায়নি। শীত বার বার আসে।
শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস বলেন, আওয়ামীলীগ রক্তের যে নেশায় মেতেছে, সেটা আর চলতে দেয়া যায় না। দেশপ্রেমিক জনগণ যদি শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে যদি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে না পড়ে তবে বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাত্রা বেড়ে যাবে। শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা লঘি-বৈঠার যে ভয়াবহ তান্ডব চালিয়েছিলো সেটার বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবেই। এ থেকে রেহাই, ক্ষমা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button