নির্বাচনী সহিংসতায় পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

Clashবিরোধীজোট বিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় সরকার। তবে এই নির্বাচনকে ‘একতরফা’ দাবি করে তা প্রতিহতের জন্য একের পর এক কর্মসূচি দিয়েছে বিরোধী জোট। হরতাল-অবরোধের পর ডাকা হয় মার্চ ফর ডেমোক্রেসি। কিন্তু পুলিশি বাঁধা এবং সরকারের কঠোর অবস্থানে সে কর্মসূচি সফল হয়নি। এর সঙ্গে দলের চেয়ারপার্সনকে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে কয়েকদিন ধরে। এসবের সঙ্গে রবিবারের নির্বাচন প্রতিহতে ডাকা হয়েছে লাগাতার অবরোধ।
এসব কর্মসূচিতে চলমান সহিংসতা ও নাশকতার কারণে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বে উন্নয়নের মডেল। ইতোমধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস, শিক্ষার উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ ৯টি বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং আরো দু’টি অর্জনের পথে। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচনী সহিংসতা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান অবস্থাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে ‘সবচেয়ে খারাপ’ বলেও মন্তব্য করেছে ব্লুমবার্গ।
পত্রিকাটি জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আ.লীগ জোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের চলমান সহিংসতা সাত শতাংশ জিডিপি অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে। এর ফলে গত ১৩ বছরে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা এক কোটি ১৬ লাখ জনগণকে পুরোপুরি দারিদ্র্যমুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়বে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বখ্যাত অর্থনৈতিক সাময়িকী ব্লুমবার্গ শুক্রবার অনলাইন সংস্করণে এ শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত ডেইলি স্টারের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানায়, গত বছর অবরোধ ও হরতালের কারণে বাংলাদেশ ৭১ দিন হারিয়ে ফেলেছে। ১৯৯১ সাল থেকে বছরে গড়ে ৪১ দিন করে নষ্ট হয় এই সহিংসতায়। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র হিসাবে, হরতালের কারণে বাংলাদেশে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। যা ব্রিটিশ শাসনে থাকার সময় স্বাধীনতার দাবিতে ডাকা একদিনে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় অবরোধে ক্ষতির সমান।
ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ক্ষমতায় কে এলো, কে গেলো এটা বড় বিষয় নয়। বড় কথা হলো উন্নয়ন নিয়ে সমালোচকদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে গত দিন দশকে আর্থ-সামজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে গেছে। কিন্তু এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলতে থাকলে আমরা পেছনে পড়ে যাবো।
বাংলাদেশে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী পরিচালক আ. গফুর বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে যাতে করে অর্থনীতিতে কোনো পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নির্বাচনের পর কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button