ত্যাগ ও নিষ্ঠার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে ত্যাগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের (বিএএসএ) সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনাদের প্রধান কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটানো এবং সর্বোচ্চ দক্ষতা ও দ্রুততার সঙ্গে সরকারের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো।
বৃহষ্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএএসএ আয়োজিত ইফতার ও বার্ষিক নৈশভোজে ভাষণদানকালে তিনি বর্তমান সরকারের গৃহীত অর্থনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংগঠনের সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে জনগণের সেবায় আরো বেশী মনোনিবেশ করবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সর্বাত্মক আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। কেননা, সরকারের সিদ্ধান্তসমূহের সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করছে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা ও দক্ষতার ওপর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঔপনিবেশিক শাসন থেকে শুরু করে সামরিক সরকার, আধা-সামরিক সরকার ও সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন ধরনের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গণতন্ত্রকে দৃঢ় ভিত্তি প্রদানের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন করতে চায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর সরকার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাসহ দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে আমরা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছি।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, অর্থনীতি ও অন্যান্য অবকাঠামো খাতসহ বিভিন্ন খাতে বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের বিবরণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর অধিকাংশ সময় জুড়ে অগণতান্ত্রিক সরকার দেশ শাসন করেছে তাই জনগণ কাঙ্খিত উন্নয়ন দেখতে পারেনি।
তিনি বলেন, এবার ক্ষমতায় আসার পর তার সরকার দেশকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০০৯ সালের সামর্থ ৩,২০০ মেগাওয়াট থেকে ৬,৬৭৫ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া, গ্যাস ও পানির সমস্যা অনেকাংশে দূর করা হয়েছে।
তিনি দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংস্পূর্ণতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএএসএ সভাপতি আবু আলম মোঃ শহীদ খান। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, কেবিনেট সচিব এম মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং বিএএসএ সাধারণ সম্পাদক এএন শামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী।
পরে, প্রধানমন্ত্রী বিএএসএ আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজে শরিক হন।
ইফতারের আগে দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি, ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যান্য শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিকদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।