পবিত্র কোরআন হাতে শপথ নেওয়ায় বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম মন্ত্রী এড হুজিক গত সোমবার পবিত্র কোরআন হাতে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অনলাইনে ব্যাপকভাবে বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ৪৩ বছর বয়সী হুজিককে প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাডের পার্লামেন্ট-বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ব্রডব্যান্ড-বিষয়ক পার্লামেন্টারি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীদের মধ্যে হুজিকই প্রথম ব্যক্তি যিনি পবিত্র কোরআন হাতে শপথ নিলেন। তাঁর মা-বাবা বসনিয়া থেকে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হয়েছিলেন। হুজিক আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে কোরআনে হাত রেখে শপথ নিতে তিনি সোজাসাপ্টা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিক শপথ অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর জেনারেল কোয়েনটিন ব্রাইস বলেন, ‘বহু সংস্কৃতিবাদ ও এ-জাতীয় সবকিছুর জন্য আজকের দিনটি বিশেষভাবে উজ্জ্বল।’এর কয়েক ঘণ্টা পর হুজিকের ফেসবুক পেজ বর্ণবাদী মন্তব্যে ভরে যায়। কেউ কেউ লিখেছেন, কোরআনে হাত দিয়ে হুজিকের শপথগ্রহণ ‘বিরক্তিকর’, কেউ বা বলেছেন ‘অ-অস্ট্রেলীয়’।
তবে হুজিক বলেন, ফেসবুকে তাঁর ওপরে যে ধরনের আক্রমণ হয়েছে তা ‘গণতন্ত্রের এক স্বাভাবিক অংশ’ এবং ‘এর জন্য উচ্চবাচ্যের কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ যারা এসব করছে, তাদের দিকে কেউ ফিরেও চায় না।’ তিনি বলেন, রাড তাঁকে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিয়ে যে ‘বিপুল সম্মানে’ ভূষিত করেছেন, তাতে তিনি এত খুশি হয়েছেন যে তখনই মা-বাবাকে ফোন করে জানিয়েছেন। তাঁর মা-বাবা ১৯৬০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়াতে গিয়েছিলেন।
এদিকে, হুজিকের প্রতি ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য করায় ভীষণ চটেছেন লেবার পার্টির সাংসদ রব মিশেল। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘হুজিকের ওপরে নোংরা আক্রমণকে কখনোই সহ্য করা উচিত নয়।…এসব আচরণ আমরা যে শালীনতা, স্বচ্ছতা বা আদর্শের জন্য লড়ছি তার জন্যে লজ্জার ব্যাপার।’
বিরোধী দলের নেতা টনি অ্যাবোট বলেন, এ ধরনের অশালীন আচরণের সঙ্গে তিনি পরিচিত নন এবং পবিত্র কোরআনে হাত রেখে হুজিক যা করছেন, সেটিকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘হুজিকের পছন্দকে আমি সম্মান করি এবং আমি মনে করি অস্ট্রেলীয়রাও এমনটাই ভাবে।’
অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী হুজিককে স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। ‘ঘৃণা প্রকাশকারী’ ও ‘বর্ণবাদীদের’ আচরণে প্রতিক্রিয়াহীন থাকায় তাঁরা হুজিককে বাহবা দিয়েছেন।