নির্বাচন বর্জন করায় দেশবাসীকে তারেক রহমানের অভিনন্দন

Tareque৫ জানুয়ারির ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একটি তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করে ১৮ দলীয় জোটের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই নির্বাচনকে প্রতিরোধ, প্রতিহত এবং বর্জন করায় দেশবাসী ও জোটের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দেশবাসীকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
রোববার পূর্ব লন্ডনের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রাত ১০টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমান একথা বলেন।
অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে নিজের এবং দলের অবস্থান তুলে ধরার এ সংবাদ সম্মেলনে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আন্দোলন অব্যাহত রাখার তাগিদ দেয়ার পাশাপাশি তারেক রহমান প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সততা এবং বিবেকবোধ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করাকে মূল লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সেই লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত সর্বাত্মক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
যেকোনো মূল্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের বলেন, প্রবাসে চলমান চিকিৎসার কারণে বর্তমানে আমি অতীতের মত রাজপথে আন্দোলনে শরিক হতে পারছি না। কিন্তু আমার চিন্তা-চেতনা, ভাবনা-পরিকল্পনার সবকিছুর আবর্তন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের জনগণ ও চলমান আন্দোলনকে ঘিরেই। আপনাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং আন্দোলনের সাফল্য আমার জীবনীশক্তি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন সবার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ থাকার পরও বিএনপি গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে সংসদেও গিয়েছিল। কিন্তু ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা অবৈধ সরকার। অবৈধ সরকারের সাথে আর কোনো আলোচনা নয়।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির প্রত্যাখ্যাত করা নির্বাচনের দিন সরকারের নির্বিচার গুলিতে নিহত হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি সাহসী সেনানী, আহত হয়েছেন অসংখ্য। নির্মম নির্যাতন ও জেল-জুলুমের স্বীকার হচ্ছেন অগণিত মানুষ। সমগ্র বাংলাদেশ যেন আজ এক রক্তের উপত্যকা। রাষ্ট্রযন্ত্রের দমন-নিপীড়নে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের বড় একটি অর্জনের জন্য আর সরকারের চাপিয়ে দেয়া পরাধীনতা এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য পরিবার-পরিজন-সহযোদ্ধা হারানোর গভীর কষ্ট বুকে চেপেই রেখেই আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও তাদের পরিবার সমূহের সেই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আত্মত্যাগের এই স্মৃতিই হবে আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চূড়ান্ত আন্দোলনের সংগ্রামী প্রেরণা। সেই আত্মত্যাগকে অর্থবহ করে তুলতে প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে যে কোনো মূল্যে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
দেশের প্রতিটি ইঞ্চি মাটিকে, প্রতিটি বাড়িকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, একাত্তরে আমরা দেশকে হানাদারমুক্ত করার যে সংগ্রাম করেছিলাম সে সংগ্রাম ছিল স্বাধীনতা অর্জনের। আর আজকের এই সংগ্রাম সার্বভৌমত্ব রক্ষার। সেই সংগ্রাম ছিল দেশকে হানাদার মুক্ত করার। আর আজকের এই সংগ্রাম দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের সবার। একে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের সবাইকে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখতে হবে। তা আমরা সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকি, আর নাই থাকি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button