মিসরের সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে আইসিসিতে মামলা

Egyptখুন, অবৈধভাবে জেলে পুরা ও জুলুম-নির্যাতন চালানোর অভিযোগে মিসরের সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মিসরের ক্ষমতাচ্যুত সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) এ মামলা করেছে। তারা তাদের সদস্যদের ওপর সামরিক বাহিনীর কৃত অপরাধের বিষয় তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
গত সোমবার ইরভিন থানভি নাতাস সলিসিটর্স প্রদত্ত লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসি ও তার সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো এবং তার পরে তার সরকারের সদস্যদের গ্রেফতার এবং সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে সমবেত সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে দিতে চরম শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘তদন্তকালে আইনজ্ঞদের দল ২০১৩ সালের নভেম্বরে যেসব বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে তাতে দেখা গেছে, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী মিসরীয় জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের সদস্যরা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।’ গত ৩ জুলাই মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ব্যাপক বিক্ষোভ-সমাবেশকালে শত শত লোককে হত্যা এবং হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত ও আটক লোকদের অধিকাংশই মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মী। গত ২৫ ডিসেম্বর ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আখ্যায়িত করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর সহিংসতা ও গ্রেফতারির মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘অকাট্য প্রমাণ’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আইসিসিকে দেয়া অভিযোগের মধ্যে সামরিক বাহিনীর কৃত ফৌজদারি অপরাধের বিস্তারিত ও অকাট্য সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। শনাক্তযোগ্য একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে কৃত এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছেÑ হত্যা, অবৈধভাবে জেল, জুলুম-নির্যাতন ও লোকদের গুম করা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে লোকদের দুর্ভোগের শিকারে পরিণত করা অথবা দৈহিক, মানসিক ও শারীরিক ক্ষতিসাধন করা। সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে বোঝা গেছে, কথিত অপরাধগুলো ছিল ব্যাপক ও সুপরিকল্পিত।’ আরব জাহানের সব চেয়ে জনবহুল দেশটিতে চলমান সহিংসতা ও গোলযোগের ব্যাপারে ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা ও সাম্প্রতিক ধরপাকড় ও জেল দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২৯ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জেন সাকি এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের দলটি সমর্থন পেতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আইসিসির কৌঁসুলির সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং আইসিসি এখন বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।  আইনজ্ঞ দলটির প্রধান তাইয়্যেব আলি বলেন, ‘এ কথা সত্য যে মিসরের জনগণ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ। তবে যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে তাদের বিচার করা ছাড়া এটি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button