অস্তিত্ব সংকটে ব্রাদারহুড

Egyptমুসলিম ব্রাদারহুডের সক্রিয় সদস্যরা এখন বসবাস করছেন শহরের বাইরে। আগে নিয়মিত যেখানে তাদের বৈঠক হতো সেগুলো এখন শূন্য। যখন বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছেন তখন মুখমণ্ডল ঢাকা। নিজেদের আত্মরক্ষার যুদ্ধে এভাবেই মাঠে নেমেছে মুসলিম ব্রাদারহুড।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরের আইন অনুযায়ী মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রত্যেক নেতাই সন্ত্রাসী। জঙ্গি নেতাদের মতো পুরোপুরি আন্ডারগ্রাউন্ড জীবনযাপন করছেন তারা। দলটির শীর্ষ অনেক নেতা এখন কারাগারে। ঠিক নেই চেইন অব কমান্ড। দমন অভিযানে ব্রাদারহুডের প্রতিবাদ করার সামর্থ্য কমলেও পুরোপুরি ভেঙে পড়েনি। ইসলামপন্থি দলটি এখন ছাত্র সদস্যদের ওপর নির্ভর করছে।
এ বিষয়ে দলটির কর্মীরা বলছেন, বর্তমানে তারা সংগঠনকে ফের সুসংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। তবে দলের মূল কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে কায়রোর বাইরের ব্রাদারহুডের শাখাগুলো। সমন্বয় না থাকার কারণেই এমনটি হচ্ছে। কায়রোর উপকণ্ঠ ফায়ুম শহরে ৩৩ বছর বয়সী ব্রাদারহুড নেতা পেশায় স্থাপত্য প্রকৌশলী বলেন, ‘মুরসির পতনের পর থেকেই আমরা সংগ্রাম করছি। মুসলিম ব্রাদারহুডের অস্তিত্ব রক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এটি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে সামরিক সরকারের পতন।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক সরকারবিরোধী যুদ্ধে ব্রাদারহুড শিগগিরই বিজয়ী হবে এটা আশা করা যায় না। ঠিক তেমনি আশা করা যায় না যে, সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার ব্রাদারহুডের পতন ঘটাবে। যেখানে দেশটিতে মুসলিম ব্রাদারহুডের হাজার হাজার সক্রিয় কর্মী আছে। আছে লাখ লাখ সমর্থক। ফায়ুম শহরের ২৭ বছর বয়সী এক তরুণ বলেন, ‘সাধারণ মিসরীয়দের অধিকাংশই বলছেন, তারা মুসলিম ব্রাদারহুডকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। এমনকি অনেকেই ব্রাদারহুডকে রক্ষায় হাতে অস্ত্র তুলে নিতেও রাজি।’ পেশায় ডাক্তার মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতা বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। নিজেদের আত্মরক্ষায় আমাদের এখন শুধু একটি পথই আছে_ তা হচ্ছে পাল্টা আক্রমণ। ব্রাদারহুডের একটি বিশেষ দল ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শহরে নিজেদের আদর্শ প্রচার করছে। নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে।’ ঊর্ধ্বতন নেতারা জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পদবণ্টনে মনোযোগ দিয়েছেন। এর পরই শুরু হবে সামরিক জান্তা পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন। তবে আপাতত অত্যন্ত কৌশলী ভূমিকায় ব্রাদারহুড। দলটির একজন শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা নেতা-সমর্থকদের জানিয়ে দিয়েছি, এক জায়গায় বেশিদিন থাকবেন না। আপাতত আপনাদের প্রাণ ও সম্পদের হেফাজত করুন। সরকারবিরোধী আন্দোলনে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’ বিশেষ করে সমর্থকদের নিজ নিজ সম্পদ আত্মীয়স্বজনদের কাছে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একই নৌকার যাত্রী। এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যাতে এই দুঃসময় পাড়ি দিতে পারি।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button