শপথ নিলেন ২৮৪ জন নবনির্বাচিত এমপি

Pmএকতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের মধ্যে ২৮৪ জন এমপি শপথ গ্রহণ করেছেন। প্রথমে আওয়ামী লীগ এমপিদের পর শপথ নেন জাতীয় পার্টির এমপিরা। তবে শপথ নিতে আসেননি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরে শপথ বাক্য পাঠ করেন জাসদ, বিএনএফ, তরিকত ফেডারেশন এবং স্বতন্ত্র এমপিরা। এতে অংশগ্রহন করেন ২৯০ জনের মধ্যে ২৮৩জন সংসদ সদস্য।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আওয়ামী লীগের এমপিদের শপথের পর জাপা এমপিরা শপথ পাঠ করলেন ১১টা ১৭ মিনিটে। এরপর বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে শপথ নেন স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপিরা। শপথ পাঠ করান নবম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শপথ পাঠ শেষে সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ শপথপত্রে আসন ও ৯ জানুয়ারি তারিখ উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেন এবং সংসদ সচিবালয়ে জমা দেন।
এরপর বাকি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী এমপিদের এক সঙ্গে শপথ পড়ানো হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক বিনা ভোটে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলো দশম জাতীয় সংসদ। অনেকেই এবার প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আগে বুধবার বিকালে নির্বাচন কমিশন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ২৯০ জন সংসদ সদস্যের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করে। পরে এ গেজেট নির্বাচন কমিশন সংসদ সচিবালয়ে পাঠিয়ে দেয়।
সংবিধানের ১৪৮ (২ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী সংসদ সচিবালয় শপথের এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
বুধবার দুপুরে ২৯০টি সংসদীয় আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট মুদ্রণের জন্য বিজি প্রেসে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। সন্ধ্যায় মুদ্রিত গেজেট নির্বাচন কমিশনে এসে পৌঁছে। গেজেট প্রকাশের ৩ দিনের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর এই শপথ গ্রহণের ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসার কথা সংবিধানে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ আসনে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। বুধবার নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের  গেজেট প্রকাশের পর সন্ধ্যায় তিনি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে রংপুর-৬ আসনটি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানান এবং তিনি গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন।
এদিকে নির্বাচনে বিজয়ী হলেও যশোর-১ আসনে শেখ আফিলউদ্দিন ও যশোর-২ আসনে মনিরুল ইসলামের নাম গেজেটে রাখা হয়নি। এই দুজনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসে নির্বাচন কমিশনে। এ কারণে কমিশন ইতোমধ্যে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে। নোটিসে তাদের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না এ মর্মে আগামী ১০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট (বিএনএফ), তরিকত ফেডারেশন এবং স্বতন্ত্রসহ মোট ২৮৪ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২২৬, জাতীয় পার্টি ৩১, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি ০৬ , জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ০৪, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ০১, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট (বিএনএফ) ১, তরিকত ফেডারেশন ১ এবং স্বতন্ত্র ১৪) জন সংসদ-সদস্য শপথ নেন।
প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ-সদস্যবৃন্দ শপথ নেন। পরে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি, হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর নির্বাচিত সংসদ-সদস্যবৃন্দ শপথ নেন।  এছাড়াও জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট (বিএনএফ), তরিকত ফেডারেশন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ-সদস্যবৃন্দ শপথ নেন।
প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৪৭টিতে ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৮টি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। সবমিলে ২৯২টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৩২টি আসন। জাতীয় পার্টি ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬, জাসদ ৫ এবং জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন ও বিএনএফ ১টি করে আসন পেয়েছে। ১৩টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button