শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে কিছু বইপত্র জব্দ করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে তালা ভেঙে ওই কার্যালয়ে প্রবেশ করে তল্লাশি শেষে পুলিশ বাড়িওয়ালার চার স্টাফকে ধরে নিয়ে গেলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার বিকেলে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একটি দল পুরানা পল্টনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও জামায়াতে ইসলামীর মহানগরী কার্যালয়ে যায়। এ দু’টি কার্যালয়ই দীর্ঘ দিন ধরে তালাবদ্ধ। পুলিশ এর আগে কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত মহানগরী কার্যালয়ে তালা মেরে যায়। এখন ওই কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ পুলিশের হাতে বলে জানা যায়। সেখানে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী যান না। অপর দিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও নেতাকর্মীরা কেউ ঢুকতে পারেন না। ওই এলাকাতেই তারা যেতে পারেন না বলে জানা যায়। এর মধ্যে গতকাল বিকেলে পুলিশ শিবির কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ সেখান থেকে বেশ কিছু বইপুস্তক নিয়ে যায়। তবে এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ দিকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের নামে তাণ্ডব ও কার্যালয়ে থাকা নববর্ষের প্রকাশনাসামগ্রী লুটের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রশিবির। গতকাল এক বিবৃতিতে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল জব্বার বলেন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ অভিযানের নামে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি। পুলিশ কার্যালয়ে থাকা নববর্ষের পাঁচ গাড়ি (ভ্যান) প্রকাশনাসামগ্রী লুট করেছে। নববর্ষের ডায়েরি, ক্যালেন্ডারসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকাশনাসামগ্রী লুট করার ঘটনা গোটা ছাত্রসমাজকে বিস্মিত করেছে।
শিবির সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর গবেষণালব্ধ ও তথ্যনির্ভর এসব প্রকাশনাসামগ্রীর সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। জ্ঞানগর্ভ এসব প্রকাশনাসামগ্রী লুট করে সরকার জ্ঞান ও মেধা বিকাশের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে অন্যায়ভাবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে তালাবদ্ধ করে রেখেছে সরকার। ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা কখনো কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই অন্যায়ভাবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি ছাত্রসংগঠন হিসেবে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের কোনো সুযোগই ছাত্রশিবিরকে দেয়া হচ্ছে না। উল্টো নির্যাতন, হামলা, মামলার মাধ্যমে এই সংগঠনকে দমানোর অপচেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে ছাত্রশিবিরের সারা দেশের কার্যালয়গুলো কেন বন্ধ এর জবাব আমরা সরকারের কাছে চাই। এটা কোন ধরনের গণতন্ত্র? গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে এমন বাকশালী আচরণ জনগণ আর দেখতে চায় না। শিবির সেক্রেটারি জেনারেল সব ধরনের অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণ থেকে বিরত থেকে সব রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।