মিশরে দুদিনব্যাপী গণভোট শুরু

Egyptমিশরের নতুন সংবিধানের ওপর মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে দুদিনব্যাপী বিতর্কিত গণভোট। এ গণভোটকে সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখানোর ব্যাপারে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মিশরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ ইব্রাহিম সোমবার বলেছেন, গণভোট বানচাল করার যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ভোট বানচালের প্রচেষ্টা সর্বোচ্চ শক্তি ও দৃঢ়তা দিয়ে প্রতিহত করা হবে। মিশরের জনগণের ‘আশা-আকাঙ্ক্ষা’ বাস্তবায়নের পথে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী কোনো কাজ সহ্য করা হবে না।
গণভোটের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য মিশরের সর্বত্র সেনাবাহিনী ও পুলিশের অন্তত সাড়ে তিন লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে মাঠে থাকবে সাঁজোয়া যান ও হেলিকপ্টার গানশিপ। মুরসির সমর্থক ইখওয়ানুল মুসলিমিন গণভোটের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানোর ঘোষণা দেয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ ভোটে অংশগ্রহণ না করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মিশরের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইখওয়ান। দলটি এ গণভোট বাতিল করে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে।
মিশরের চলমান গণভোটকে সংবিধান পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন ইখওয়ানুল মুসলিমিনের নেতা মুহাম্মাদ গানেম। লন্ডনে অবস্থান করা এ নেতা বলেন, গণভোট আয়োজনের সমস্ত প্রক্রিয়াই হচ্ছে অসাংবিধানিক। এ কারণ তার দল এ গণভোট বয়কট করেছে।
তিনি বলেন, মিশর বিপ্লবের মাধ্যমে সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের পতনের পর একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিশ্ববাসীর সামনে দেশের জনগণ গণভোটের মাধ্যমে যে সংবিধান প্রবর্তন করেছিল সেটিই হচ্ছে প্রকৃত এবং বৈধ সংবিধান। কিন্তু এখন যে সংবিধান গ্রহণের জন্য গণভোট হচ্ছে তা সেনা সমর্থিত কথিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। সে কারণে এ সংবিধানকে স্বীকৃতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তা বৈধতাও পাবে না। ২০১২ সালে প্রণীত সংবিধানের সঙ্গে এর তুলনাও হতে পারে না। তিনি গণভোটের সামগ্রীক আয়োজনকে অর্থ, শ্রম ও সময়ের অপচয় বলে মন্তব্য করেন।
মুহাম্মাদ গানেম বলেন, মিশরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখনো ড. মুহাম্মাদ মুরসি বৈধ কারণ তিনি গণতান্ত্রিক পরিবেশে প্রথমবারের মতো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। সারা বিশ্ব এ ভোটের ফলাফলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
তিনি ইখওয়ানুল মুসলিমিনকে মিশরের জনগণের জন্য দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো বলেও দাবি করেন। ইখওয়ানের এ নেতা জানান, মিশরে গত ৩ জুলাই সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
মুরসির শাসনামলে মিশরের প্রণীত সংবিধানে আমূল পরিবর্তন এনেছে বর্তমান সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অনেকে বলছেন, এ সংবিধান বিপ্লবপূর্ব মিশরে অর্থাত হোসনি মুবারকের যুগে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম করবে।
মঙ্গল ও বুধবারের গণভোটে নয়া সংবিধান অনুমোদিত হলে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিশরে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নয়া সংবিধানে সেক্যুলার আইন সংযোজন করার কারণে ইখওয়ানের কোনো নেতা ওই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button