ইনকিলাবের তিন সাংবাদিক জেলে
দৈনিক ইনকিলাবের তিন সাংবাদিককে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অপরাধবিয়ষক প্রতিবেদক আহমদ আতিকের ব্যাপারে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত তিন সাংবাদিক হলেন ইনকিলাবের বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবি, সিনিয়র রিপোর্টার সহকারী প্রধান প্রতিবেদক রফিক মুহাম্মদ ও আহমদ আতিক। রাজধানীর ওয়ারী থানায় দায়েরকৃত তথ্য প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি এ্যাক্ট) মামলায় গত বৃহষ্পতিবার রাতে ইনকিলাব কার্যালয় থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে তাদেরকে মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়। শুক্রবার দুপুরের পর তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ আহমদ আতিককে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে। কেস ডকেট না থাকায় আগামী সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম ইউনুস খান আজ বিকেল ৪টার দিকে এই আদেশ দেন। গ্রেফতারকৃত তিন সাংবাদিকের জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন তাদের আইনজীবীরা। আদালত সে আবেদন না মঞ্জুর করেন।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবির উপ-কমিশনার (ডিসি) জাহাঙ্গীর হোসেনের মাতুব্বরের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল রাজধানীর টিকাটুলিতে অবস্থিত ইনকিলাব অফিসে তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে এবং কয়েকটি কম্পিউটার জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে পত্রিকাটির ছাপাখানা, সার্ভার রুম, প্লেট রুম সিলগালা করে দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিয়েছে ইনকিলাবে প্রকাশিত এমন একটি সংবাদের জের ধরেই দৈনিক ইনকিলাবের আরকে মিশন রোডের অফিসে তল্লাশি চালায় এবং পত্রিকাটির তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ ।
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদটি গুজব। এমন অসত্য সংবাদ প্রকাশ তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইনকিলাব পত্রিকাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়ারী থানায় দায়ের করা মামলায় দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, পত্রিকার প্রকাশক, প্রধান বার্তা সম্পাদক, প্রকাশিত সংবাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে আসামি করা হয়েছে। এতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ২০০৬ (সংশোধীত ২০১৩)-এর ৫৭(১), ৫৭(২), ৬৬(১), ৬৬(২) ধারা সংযুক্ত পেনাল কোডের ৫০৫(গ) ও (ঘ) ধারায় অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাদী এসআই জাহাঙ্গীর আলম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ১৬/০১/২০১৪ইং তারিখে ঢাকার ২/১ আরকে মিশন রোডের ইনকিলাব এন্টারপ্রাইজ এন্ড পাবলিকেশন লিমিটেডের দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার ওয়েব সাইটে এবং ঐ ঠিকানা হতে প্রকাশিত দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় “সাতীরায় যৌথবাহিনীর অপারেশনে ভারতীয় বাহিনীর সহায়তা” শিরোনামে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হয়।
এদিকে, ইনকিলাবের ছাপাখানা বন্ধ থাকায় আজ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়নি। সাংবাদিকরা অফিসে গেলেও তারা কাজ করতে পারেননি।