আরাকানে বৌদ্ধ হামলায় ২২ মুসলমান নিহত
মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে বৌদ্ধ হামলায় ২২ মুসলমান নিহত হয়েছে। এদের সবাই নারী ও শিশু। নিরাপত্তা বাহিনরি পরিচয়ে দুর্বৃত্তরা মুসলিম নারী ও শিশুদের টেনে হিঁচড়ে চাকু দিয়ে কোপায় বলে এক গ্রামবাসী ও একটি মানবাধিকার গ্রুপ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। সরকারি সূত্র সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কথা স্বীকার করলেও কেউ নিহত হয়নি বলে জানিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আরাকান প্রজেক্টের ক্রিস লেওয়া জানান, বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, গত মাসে ৯৬৯ নামে পরিচিত চরমপন্থী বৌদ্ধ আন্দোলনের ভিক্ষুরা ওই এলাকা সফর করার পর থেকেই উত্তেজনা চলছে। ভিক্ষুরা লাউডস্পিকারে সব রোহিঙ্গাকে বহিষ্কার করার আহ্বান জানায়।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের সময় দু চার ইয়ার তান গ্রামে তিনটি মৃতদেহ পাওয়ার পর উত্তেজনায় নতুন মাত্রা লাভ করে। কয়েকদিন আগে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী যে আটজন রোহিঙ্গাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, এই তিনটি লাশ তাদের বলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। অনেকেই লাশের ছবি তুলতে সেলফোন নিয়ে আসে। ওই রাতেই পুলিশ গ্রামে চড়াও হয়ে ফোন সেটগুলো জব্দ করে এবং পরিবার সদস্যদের তালিকা পরীক্ষা করে।
মানবাধিকার গ্রুপটির সাথে জড়িত এক ইংরেজির শিক্ষক বলেন, এসময় গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পুলিশদের ধাওয়া করে। পরে ভোর ২টার দিকে পুলিশ ফিরে এসে জানায়, তাদের এক সদস্য নিখোঁজ রয়েছে। তখন শুরু হয় নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডব।
ওই ইংরেজির শিক্ষক বলেন, সৈন্য ও পুলিম গ্রামটি ঘিরে দরজা ভেঙে ফেলে। তারা গবাদি পশু ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। রক্ষা পেতে সব পুরুষ দৌড়ে পালিয়ে যায়, বাড়িতে থেকে যায় নারী, শিশু ও বয়স্করা।
লেওয়া জানান, ওইসব রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহতের সংখ্যা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। অনেকের মতে, নিহতের সংখ্যা ১০-এর কম। তবে কারো কারো মতে তা ১২ জনের বেশি। ওই ইংরেজি শিক্ষক লেওয়াকে জানিয়েছেন, ১৭ নারী ও পাঁচ শিশু নিহত হয়েছে।
মিয়ানমারে দুই বছর ধরে মুসলমানদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বৌদ্ধরা। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন নিহত এবং এক লাখ ৪০ হাজার গৃহহীন হয়েছে।