লাখো মুসল্লির পদভারে মুখর তুরাগ তীর
মোহাম্মদ আলী ঝিলন:
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা। রবিবার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী প্রথম দফার ইজতেমা শেষ হবে। প্রথম দফার পর চার দিন বিরতি দিয়ে ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এটা ৪৯তম বিশ্ব ইজতেমা।
এবারের ইজতেমা আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এছাড়াও বেসরকারি অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ইজতেমায় আগত মুসুল্লিদের ফ্রি চিকিৎসা প্রদানসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যেই শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে নৌকা, বাস-ট্রাক, কার-পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে মুসল্লিরা টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাস্থলে আসছেন। তারা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামালের গাইট (গাট্টি) ও ব্যাগ নিয়ে মাঠের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত মুসল্লিদের আগমন অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বুধবার থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামাতবদ্ধ মুসল্লিরা এসে ময়দানের খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। টঙ্গীর ইজতেমাস্থল এখন মুসল্লিদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
এবারো ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি এবং একইভাবে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে তা শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি। তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে। ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শুনেন এবং ইসলামের দাওয়াতিকাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে এখান থেকেই দ্বীনের দাওয়াতিকাজে বেরিয়ে যান। ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের তাবলীগ অনুসারীরা মিলিত হন এই ইজতেমায়। ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশের মাঝামাঝি এলাকায় তুরাগ তীরে নামাজ পড়ার মিম্বর ও বয়ান মঞ্চ এবং পশ্চিম-উত্তর কোণায় দোয়া মঞ্চ, মাঠে তাশকিলের কামড়া, মোকাব্বির মঞ্চ ও জুড়নেওয়ালে জামাত কক্ষ নির্মাণসহ বিশেষ ছাতা মাইক স্থাপনের কাজ শেষ হয়ে গেছে। গোসলের হাউজ ও টয়লেট স্থাপন ও সংস্কারের কাজও শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসুল্লী দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসায় ইতোমধ্যে টঙ্গী স্টেশন রোড ও কামারপাড়াসহ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকায় মাঝে মধ্যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া সড়কে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমেই যানজট দেখা যায়। ইজতেমা ময়দানের উত্তর পাশের এ রাস্তাটি ব্যবহার করেই বিদেশী মুসুিল্লসহ উত্তরাঞ্চলের মুসুল্লিদের মূলময়দানে প্রবেশ করতে হয়। আর এ পথে মালবাহী ট্রাক, লেগুনাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করায় এ যানজটের সৃষ্টি। মুরুব্বীরা কামারপাড়া এ সড়ককে বৃহস্পতিবার থেকেই ট্রাকসহ পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে।