সাফল্যের ৩ বছর উদযাপন করলেন মেয়র লুতফুর রহমান

Mayorটাওয়ার হ্যামলেটস এর নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান তার সাফল্যের তিন বছর উদযাপন করলেন। সবশ্রেনী-বর্ণ,মত ও পথের মানুষ এবং বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ক্যানারিওর্ফের উইন্টারগার্ডেনে মংগলবারের এই অনুষ্ঠানে সকলেই মেয়রের সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়ে তার অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করেন। বক্তারা ইংল্যান্ডে সবচেয়ে বেশী সোস্যাল হাউজ নির্মানের স্বীকৃতি পাওয়ায় এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বৃটেনের টপ টেন হওয়ায় নির্বাহী মেয়রকে অভিনন্দন জানান।
টাওয়ার হ্যামলেটস এর ২০টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, কাউন্সিলারবৃন্দ, কমিউনিটি, ব্যবসা, রাজনীতি,সমাজ-সংস্কৃতি-মিডিয়া এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে পুরো অনুষ্ঠান ছিলো ব্যতিক্রমী। ট্রান্সফরমিং টাওয়ার হ্যামলেটস-শিরোনামে এক হলে নানা পথ ও মতের মানুষের এই মিলন মেলার সূচনায় নির্বাহী মেয়রের তিন বছরের সাফল্যের উপর বিশেষ ডকুম্যান্টারী পদর্শন করা হয়। তুলে দেয়া হয় একটি সচিত্র রিপোর্ট বই।   নির্বাহী মেয়র তার বক্তৃতায় বলেন, আমি যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম, তা রেখে চলেছি। যে কেউ আমার নির্বাচনকালীন প্রকাশিত প্রতিশ্রুতি দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমি বলেছিলাম বছরে ১ হাজার করে চার হাজার সোস্যাল হাউজ নির্মান করবো। তিন বছরে ৩২৫০টি ঘর নির্মান হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের কারনে আমি চার বছরের বদলে সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব থাকবো। কিন্তু ইনশাআল্লাহ চার বছরের কাজ সাড়ে তিন বছরেই হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লবের কথা আমরা বলেছিলাম। এখন সবাই জানেন টাওয়ার হ্যামলেটস পুরো বৃটেনের শিক্ষা ক্ষেত্রে মর্যাদার আসনে চলে এসেছে। এর স্বীকৃতি যেমন বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী দিয়েছেন, তেমনি সাবেক লেবার পার্টির শিক্ষা মন্ত্রীও বলেছেন, টাওয়ার হ্যামলেটস সারা দেশের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। ফ্রি স্কুল মিলস, ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট এসব প্রজেক্ট এদেশে প্রথমবারের মতো আমরাই করেছি।  আর কমিউনিটি সেইফটি,ড্রাগস,ইয়ুথ ফেসেলিটি, সংস্কৃতি, সোস্যাল সার্ভিস,পার্ক,ফেইথ গ্রান্ট-ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে আমরা যেমন অব্যাহত ভাবে সেবা চালিয়ে যাচিছ ঠিক তেমনি নতুন নতুন ব্যতিক্রমী উদ্যোগও নিচিছ।
Mayor2লুতফুর রহমান বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন তিন বছরে ১২০ মিলিয়ন ফান্ডিং কার্টের পরওই এসব কাজ কী ভাবে হচেছ। আমরা এসব করছি, কাউন্সিলের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরো বেশী দায়িত্বশীলীতার মাধ্যমে, আরো বেশী কস্ট ইফেকটিভ পলিসিরি মাধ্যমে।
হারো কাউন্সিলের শিরিমনিয়্যাল মেয়র নানা আসান্টি ও টিভি প্রেজেন্টার ব্যারিস্টার রেজওয়ান হোসেনের পরিচালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ।
তিনি বলেন, আমরা সমাজ ও কমিউনিটির স্বার্থে কাজ করার জন্য লুতফুর রহমানের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম। আজ গর্বের সাথে বলতে পারি যে তার সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমিও উন্নয়ন ও কল্যানের অংশ।
মেয়র পদ্ধতির মাধ্যমে জনগনের কাছে জবাবদিহীতা এং জনগনের ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরেন ইয়েস ফর মেয়র ক্যাম্পেইন কমিটির চেয়ার সিরাজ হক।
স্থানীয় পপলার বাথ স্টিয়ারিং কমিটির নেত্রী লিল কলিন্স বলেন, মেয়র লুতফুর কথা রাখেন। ১০/১৫ বছর যাবত বন্ধ থাকা পপলার বাথ ও স্টেপনির একটি ইথুয় সেন্টারের জন্য ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে। অনেক নেতাই এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন,কিন্তু কাজ করেছেন লুতফুর।  ওপারেশন ব্লেক ভোট ইউকের ডিরেক্টর সায়মন উলি তার জোরালো কক্তের বক্তৃতায় বলেন, লুতফুর রহমান পুরো ইউরোপের এথনিক কমিউনিটির গর্ব। টাওয়ার হ্যামলেটস এর সাদা-কালো-বাদামী সবাইমিলে একমাত্র ব্লেক মেয়র লুতফুরকে ধরে রাখার মাধ্যমে তাদের গর্বকেই ধরে রাখতে হবে। সায়মনের অনুরোধে সবাই দাড়িয়ে সম্মান জানান মেয়র লুতফুরকে।  অনুষ্ঠানে মেয়র লুতফুর রহমান যেমন তার কর্মততপরতার কথা তুলে ধরেন ঠিক একই ভাবে আগামীর পরিকল্পনারও কিছু জানান দেন।
Mayor3মেয়রের সাফল কর্মসূচীর মাধ্যমে পুরো বারার চেহারা পরিবর্তিত হচেছ বলে মন্তব্য করেন টাওয়ার হ্যামলেটস ক্যাথলিক চার্চ গ্রুপের নেতা ফাদার মাইক্যাল ডনি ও কাউন্সিল অব মস্ক এর চেয়ার মাওলানা সামসুল হক। সমপানী বক্তৃা ছিলেন বৃটিশ বাংলাদেশ চেমবারের প্রেসিডেন্ট মুকিম আহমদ। তিনি বলেন, এই কমিনিটির সন্তান লুতফুর রহমান, তাই কমিউনিটির চাহিদার কথা তিনি ভালো করেই জানেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন এবং ভিডিও কমেন্ট এর মাধ্যমে মেয়রের সাফল্যের স্বীকৃতি জানান, লেবার পার্টির এনইসি মেমবার ক্রিস্টিন সো ক্রফট, লেবার পার্টির সাবেক বারা সেক্রেটারী স্টিভেন ব্যাকেট, সাবেক লিবডেমের এমপি প্রার্থী আজমল মাসরুর,সাবেক কনসারভেটিভ এমপি প্রার্থী জাকির খান, বিসিএ প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার,বৃটিশ কারী এওয়ার্ডের ফাউন্ডার এনাম আলী এমবিই, বাংলাদেশ সেন্টারের সেক্রেটারী মুজিবুর রহমান,জিএসসি চেয়াপার্সন নুরুল ইসলাম মাহবুব,ইউকে আওয়ামলীগের প্রধান উপদেষ্টা সামসুদ্দিন খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল উদ্দিন, ইউকে বিএনপি প্রেসিডেন্ট সাইস্তা চৌধুরী, জাতীয় পার্টি সেক্রেটারী তাজ চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা আবু তাহের চৌধুরী, জুইস কমিউনিটি নেতা লিওন সিলভার, চেমবারের ডিজি মাহতাব চৌধুরী, ফাইনান্স ডিরেক্টর মুহিব চৌধুরী, স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিক হায়দার, জামাল উদ্দিন, জেএমজি কার্গোর এমডি মনির আহমদ,ব্যবসায়ী বশির রাজা চৌধুরী, হারুন মিয়া, এলএমসি সেক্রেটারী আয়ুব খান,জামিয়াতুল উম্মার প্রিন্সিপাল আবদুর রহমান মাদানী, কাউন্সিরের সাবেক লেবার ডিপুটি লিডার বর্ণবাদ বিরোধী নেতা রাজন উদ্দিন জালাল,শিক্ষাবিদ ড: হাসনাত হোসেন, ইউকে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী সৈয়দ ফারুক,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শামিম আজাদ,উদিচি প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা,সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সেক্রেটারী দিলু নাসের, খেলাফত মজলিসের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর আবদুল কাদির সালেহ,জমিয়ত নেতা মুফতি আবদুল মনতাকিম,ইস্ট লন্ডন সিটিজেন অর্গানাইজেশন এর টেলকো-এর সিইও নেইল জেনসন, কো চেয়ার নিক কোকসহ আরো অনেকে।
নেইল জেমসন, নির্বাহী মেয়র দায়িত্ব নিয়েই লন্ডন লিবিং ওয়েজ বাস্তবায়নের প্রতিশ্র“তি রক্ষা করায় তাকে অভিন্দন জানান।
Mayor4তিনি বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস লন্ডনের প্রথম বারা হিসেবে এই কাজটি করে।  ক্যানারিওফ গ্র“পের চেয়ারম্যান জর্জ আকাবাসকো, স্ট্রাটিজিক এডভাইজার হাওয়া ডোভার, বাংলা মিডিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সম্পাদকবৃন্দ অনুষ্ঠানে যোগদেন।
অনুষ্ঠানে মেয়রের  নতুন গ্রুুপ টাওয়ার টাওয়ার হ্যামলেটস ফাস্ট এর পরিচিতি ছিলো সবখানে। এই নামে এবং ঘর মার্কায় তিনি ও তার গ্র“প নির্বাচন করবেন। টাওয়ার হ্যামলেটস ফাস্ট এর সাথে যুক্ত থাকার জন্য স্থানীয় অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং ব্যবসায়ীদের অনেকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কমিটম্যান্ট অনুযায়ী ৫৫হাজার পাউন্ড উত্তোলিত হবে বলে আশা করা হচেছ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button