লেবার পার্টির মেয়র প্রার্থী জন বিগসের কঠোর ক্রাইম পলিসিম্ব ঘোষণা

Labourমেয়র নির্বাচিত হলে জন বিগস টাওয়ার হ্যামলেটসের অপরাধ এবং এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার (ইওঈ) দমনে ষ্ক্রজিরো টলারেন্সম্ব অবস্থান গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মতে অপরাধ এবং এন্টিসোশাল বিহেভিয়ার দমন বারার বাসিন্দাদের প্রথম চাহিদা।
জন বিগস ২০ জানুয়ারী, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষনা দেন। টাওয়ার হ্যামলেটসে লেবার পার্টির মেয়র প্রার্থী জন বিগসের ষ্ক্রক্রাইম পলিসিম্ব ঘোষণা উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস পার্কে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন লেবার গ্রুপের লীডার কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলাম এবং কাউন্সিলার ডেনিস জোন্স। এছাড়া লেবার পার্টির বেশ কজন সিনিয়র কাউন্সিলার এবং কাউন্সিলার প্রার্থীও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। জন বিগস এদের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জন বিগস জানান, ল্ফুুর রহমান ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে টাওয়ার হ্যামলেটেসে অপরাধ বেড়েছে ১.৪%। অথচ একই সময়ে লেবার পার্টি পরিচালিত প্রতিবেশী বারা নিউহাম এবং হ্যাকনীতে অপরাধ কমেছে। বিশেষ করে নিউহামে অপরাধ কমেছে ৮%। ২০১০ সালের পর থেকে টাওয়ার হ্যামলেটস ২৪৫ জন পুলিশ অফিসার এবং পিসিএসওম্বর পদ হারিয়েছে এবং প্রতি এলাকায় লোকাল নেইবারহুড পুলিশের অফিসারের সংখ্যা ৬ জন থেকে কমিয়ে ২ জন করা হয়েছে। এ কারনে এখানে নাইফ ক্রাইম ৪৯% এবং ছিনতাই ৫০% বেড়েছে, পাশাপাশি গত বছর ২০ হাজার এন্টিসোশাল বিহেভিয়ার রেকর্ড হয়েছে।
তিনি বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টি সম্প্রতি এ ব্যাপারে বারার বাসিন্দাদের মতামত জানার বিশেষ ক্যাম্পেইন চালু করে। আর এর মাধ্যমে উঠে এসেছে এক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়াজনিত বাসিন্দাদের হতাশার চিত্রটি। শত শত বাসিন্দা তাদের সময় ব্যয় করে এ ব্যাপারে তাদের মতামত তথা উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
জন বিগস বলেন – আমি টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচিত হলে বারায় সকল ধরনের অপরাধ কমিয়ে আনার বিষয়টিকে সবের্ধ্বাচ্চচ অগ্রাধিকার দিব। আর মতামত জানার জন্য বাসিন্দাদের সাথে ক্যামেরা ক্র ছাড়াই বৈঠক করবো এবং পুলিশ ও অন্যদের সহায়তায় তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।  তিনি আরো বলেন, বর্তমান মেয়রের আমলে টাওয়ার হ্যামলেটেসে অপরাধ বাড়ার অনেক কারন থাকলেও দেখা গেছে মেয়র ছোট ছোট সিদ্বান্ত গ্রহণেই সময় নিচ্চেছন বেশী।
তিনি বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসে বর্তমান মেয়র ল্ফুুর রহমানের আমলে বৃদ্বি পাওয়া অপরাধ কমিয়ে আনতে এমন একজন মেয়র দরকার যিনি এব্যাপারে কঠোর এবং যথাযথ কর্মসূচী গ্রহন করবেন। ওয়াপিং ওয়ার্ডের লেবার দলীয় কাউন্সিলার ডেনিস জোন্স তার বক্তব্যে বলেন, ওয়াপিং এলাকায় নাইফ ক্রাইম এবং অন্যান্য বড় বড় ঘটনার প্রেক্ষিতে ল্ফুুর রহমানের প্রতিক্রিয়া চরম হতাশাজনক। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশের সাথে কাজ করার পরিবর্তে তিনি পরিস্থিতিকে এড়িয়ে যাচ্চেছন এবং তার ধারনা যেন সবকিছু এমনি এমনি ঠিক হয়ে যাবে। এর বীপরিতে জন বিগস বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ওয়াপিং এলাকায়, আমি এবং লেবারের রবার্ট স্কট ও বাসিন্দাদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্চেছন।  অপরাধ দমনে সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত জন বিগসের অঙ্গিকারগুলো
-কনজারভেটিভ দলীয় লন্ডন মেয়র কতৃক বিলুপ্ত স্থানীয় নেইবার হুড পুলিশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।
-এলকোহল সম্পৃক্ত অপরাধ এবং উগ্র এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার (ইওঈ) দমনে ষ্ক্রজিরো টলারেন্সম্ব অবস্থান গ্রহন করা হবে। যেসব বার, ক্লাব এবং ফাস্ট ফুড শপ তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনে বিশেষ করে রাতের বেলা এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার দমনে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে, প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স কেড়ে নেয়া হবে।
-বাসিন্দাদের শান্তির জন্য হাউজিং এস্টেটগুলোর নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হবে। নতুন নতুন সিসিটিভি ও লাইট সংযোগ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর নিরাপত্তা দরজাকে মজবুত করার মাধ্যমে তা করা হবে। যে সব ল্যান্ডলর্ড প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ হবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো নিরাপদ দরজা এবং সিড়ির লাইটিং ইত্যাদি। প্রত্যেক এস্টেটে দক্ষ এএসবি (এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার) অফিসারের ব্যবহার এবং নিয়োগের জন্য সোশাল ল্যান্ড লর্ডদের উ্সাহিত করা হবে।
-ইয়ুথ সার্ভিসে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে তরুনদের অপরাধ এবং এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। –  কমিউনিটির সকল স্তরের মানুষদের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে হিংসা সংলিষ্ট অপরাধ দমনে উদ্যোগ নেয়া হবে,
-বরিস জনসন কতৃক পুলিশ অফিসার ও পুলিশ ষ্টেশন কাটের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গ্রহন করা হবে,
-কাউন্সিলের এনফোর্সমেন্ট অফিসারদের যথাযথভাবে ব্যবহার করে বারার অপরাধপ্রবণ এলাগুলোতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে, –  যথাযথ বিনিয়োগের দ্ধারা জনপরিসরের উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হবে,
-একজন কার্যকর মেয়র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য এএসবি (এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার) এবং অপরাধ বিষয়ে নিয়মিত রিভিউ মিটিং এর ব্যবস্থা করা হবে যাতে পুলিশ এবং এনফোর্সমেন্ট বিভাগ বাসিন্দাদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে। এছাড়া নিয়মিত পাবলিক মিটিংয়ের আয়োজন করা হবে। নেইবারহুড প্ল্যান বাসিন্দাদের চাহিদা মোতাবেক হবে। যেমন স্ট্রীটে লাইটিং দরকার না আরো সিসিটিভি দরকার তা বাসিন্দাদের কাছ থেকে জেনে নেয়া হবে।
-লেবার মেয়রের সরাসরি নেতৃত্বে অপরাধ এবং এন্টি সোশাল বিহেভিয়ার দমন অভিযান পরিচালিত হবে। মেয়র নির্বাচিত হলে টাওয়ার হ্যামলেটসে এ সমস্যা সমাধানে পুলিশ এবং অন্যান্য এজেন্সির সাথে মেয়রের নেতৃত্বাধীন পার্টনারশীপ গড়ে তোলা হবে।
-বর্তমান মেয়রের চরম ব্যর্থ কেন্দ্রীয় নীতি বাতিল করে স্থানীয় সংগঠনগুলোর কাছে পাওয়ার ফিরিয়ে দেয়া হবে। কারন সংগঠনগুলো তাদের এলাকা এবং তরুনদের সম্পর্কে সবচাইতে বেশী অবহিত। আরো উন্নত ইয়ুথ সার্ভিস দেয়ার জন্য লোকাল কমিউনিটির সাথে একত্রে কাজ করা হবে।  সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলার হেলাল আবধ্বাস, কাউন্সিলার আব্দুল মুকিত চুনু এমবিই, কাউন্সিলার যশোয়া প্যাক ও কাউন্সিলার জন পিয়ার্স আর কাউন্সিলার প্রার্থীদের মধ্যে সানু মিয়া, ফারুক আহমেদ, তারিক খান, সাবিনা আক্তার, ভিক্টোরিয়া ওবাজী, রবার্ট স্কট, জামালুর রহমান, ক্লেয়ার হ্যারিসন, ডেনি হ্যাসেল ও আব্দিরাশিদ গোলায়েদ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button