বিদেশি জেহাদি নিয়ে মাথাব্যথা ইউরোপের
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বিদেশি জেহাদিদের নিয়ে মাথাব্যথা বাড়ছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের মতো দেশে। মূলত এই চারটি দেশ থেকে বহু যুবক সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়েছে। তিন প্রশাসনের আশঙ্কা, প্রত্যাবর্তনের পর এরাই না দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চিন্তার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ান। যুদ্ধ করতে গিয়ে গত তিন বছরে সিরিয়ায় ইউরোপের বহু যুবক মারা গিয়েছে।
জাতিসংঘে সরকার ও বিরোধীদের আলোচনা চললেও, অশান্তিতে এখনই ইতি পড়বে, সে সম্ভাবনা কম। এই অবস্থায় আরও বেশি সংখ্যক যুবা সিরিয়ায় যেতে পারে, সে আশঙ্কা রয়েছে তিন দেশেরই।
ফ্রান্সের ইন্টিরিয়র মিনিস্টার ম্যানুয়েল ভ্যালস জানিয়েছেন, প্রায় ২৫০ ফরাসি যুবক সিরিয়ায় গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। ভ্যালসের কথায়, ‘পরিস্থিতি রীতিমত আশঙ্কার। আসন্ন কয়েক বছরে আমাদের দেশের সামনে যে সমস্যাটি সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিতে পারে, তারই বীজ বপনের কাজ চলছে সিরিয়ায়।’
বেলজিয়াম থেকেও শ’দুয়েক যুবক পাড়ি দিয়েছিল সিরিয়ায়। তাদের মধ্যে জনাকুড়ি মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিদিয়ের রইনডার্স। জার্মানির গোয়েন্দা দফতর সূত্রের খবর, সে দেশে থেকে প্রায় ৩০০ জন গিয়েছিল সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অংশ নিতে। মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৫।
তবে চিন্তা সবচেয়ে বেশি ব্রিটেনের। সেখান থেকে ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি সিরিয়ায় গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই জেহাদিদের সবারই উদ্দেশ্য সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা।
ব্রিটেনের গবেষক উসমা হাসানের তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘ব্রিটিশ গোয়েন্দারা জেনেছেন, ব্রিটেনে হামলার একাধিক ছক কষা হচ্ছে। চিন্তার বিষয় হলো, এর অনেকটিই কোনো না কোনোভাবে সিরিয়ার সঙ্গে যুক্ত। আমি অন্তত এতে অবাক হচ্ছি না। কেননা আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে এমনটা ঘটতে আমরা আগে দেখেছি।’
ফরাসি বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ গিডেয়ারের কথায়, ‘সিরিয়ার নরমপন্থী বিরোধীদের কাছে ইউরোপ থেকে যাওয়া জেহাদিরা একটা বোঝা। বিড়ম্বনার কারণও বটে। তারা ইউরোপের এই দেশগুলোর সরকারকে কথা দিয়েছিলেন, ভিনদেশি জেহাদিদের প্রশ্রয়
দেবেন না।’
গিডেয়ার বলেন, ‘নরমপন্থীরা ঠাঁই না দিলেও আল কায়দার ঘনিষ্ঠ আল নুসরা ফ্রন্ট বা ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এবং সিরিয়ার মতো সংগঠনগুলো দু’হাত তুলে বিদেশি জেহাদিদের স্বাগত জানিয়েছে। এটা নিশ্চিতভাবেই চিন্তার কথা।’