তারেক রহমানের শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দুদকের
সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে সোমবার এ অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি ইকবাল মান্দ বানুর বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে দুদক। ওই নোটিশ ইকবাল মান্দ বানুর পক্ষে তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন গ্রহণ করেন। অভিযুক্ত ইকবাল মান্দ বানুর বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হলে তিনি ওই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রিট পিটিশন (রিট পিটিশন নং-৯৭৮/২০১২) দায়ের করেন এবং স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত হন। পরবর্তী সময়ে কমিশনের পক্ষে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বরাবর সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (আপিল নং-৯৯১/১৩) দায়ের করা হলে হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশ স্থগিত করা হয়।
আপিল বিভাগের সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখের আদেশে রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশ স্থগিত করার বিষয়টি কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান পত্র মারফত দুদককে জানান। আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকায় বর্তমানে ওই রিট সংশ্লিষ্ট দুদকের কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত কোনো বাধা নেই মর্মেও ওই পত্রে উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ২৯ মে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারেক রহমানের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৮ হাজার ৫৬১ দশমিক ৩৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ সর্বমোট ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ দশমিক ৩৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও তার শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারাসহ জরুরি ক্ষমতা বিধিমালা ১৫ (ঘ) ধারায় মামলা (মামলা নং-৫২) দায়ের করে দুদক।
সূত্র আরও জানায়, ওই ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ দশমিক ৩৭ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদের মধ্যে জোবাইদা রহমানের নামে ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। তারেক রহমানের দাবি অনুসারে ওই এফডিআরের অর্থ তার শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু তার মেয়ে জুবাইদা রহমানকে দান করেছেন। দুদকের তদন্তে ওই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। বরং জুবাইদা রহমান ও ইকবাল মান্দ বানু এর মাধ্যমে তারেক রহমানের অবৈধ আয়কে বৈধ করার অপচেষ্টায় সহায়তা করেছে মর্মে প্রমাণিত হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ আদালতে মামলাটির চার্জশিট (চার্জশিট নং-৭৮) দাখিল করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দুদক কর্মকর্তা জানান, তারেক রহমানের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। মামলাটির তদন্ত পর্যায়ে তারেক রহমানের শাশুড়ির বৈধ/অবৈধ সম্পদের হিসাব পাওয়া যাবে। এতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের দায়েরকৃত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।