গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দীর্ঘ ১১ মাস অপেক্ষার পরে আবারও যাত্রা শুরু হল বাঙালির কাঙ্ক্ষিত প্রাণের বই মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৪। শনিবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে বিকেল ৩টার দিকে মেলায় এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য শেষে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
ভাষা আন্দোলন ও গ্রন্থমেলার ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রন্থ প্রকাশনা সহজ করতে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা সম্প্রসারণের বিষয়টি তুলে ধরে বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী, রমনা বটমূল, শিল্পকলা একাডেমি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ঘিরে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার ঘোষণা দেন তিনি।
দেশবাসীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পেরেছি। ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর শুরু হয়েছে, যেহেতু সরকার গঠন করতে পেরেছি বাকিদের রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হবে।’
এ সময় বাংলা ভাষাকে আরো সমৃদ্ধ করতে কবি, লেখক, গবেষক ও ভাষা তাত্ত্বিকদের আরো এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বক্তব্য দেয়ার আগে এবার বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট এবং এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া একজনকে বাংলা একাডেমি সম্মাননাসূচক ফেলোশিপ দেয়া হয়।
বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর এমিরেটস ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে মেলা। তবে একুশে ফেব্রুয়ারিতে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে।
অমর একুশের ভাষাশহীদদের স্মরণে আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে ভাষাসৈনিক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে।
একাডেমি সূত্রে জানানো হয়েছে, গ্রন্থমেলায় মোট ২৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশেই রয়েছে মূলধারার প্রকাশনা সংস্থাগুলো। উদ্যানে ২৩২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪৩২টি ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ২৪টি শিশু-কিশোরদের বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৩টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, গণমাধ্যমসহ ৪৩টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬৯টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মেলায় বাংলা একাডেমির প্রকাশনা ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকাশনা ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হবে।