মৃত্যুঝুকিতে ১০ লাখ ব্রিটিশ নারী

Yasminমাত্র সতের বছরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো ভয়াবহ রোগের শিকার হয়েছিলেন বিউটি কুইন জর্জিয়া হল্যান্ড। চিকিৎসকদের মতে, ইংল্যান্ডের এই কিশোরী সুন্দরী জন্মনিয়ন্ত্রণের ঔষধ সেবনের কারণেই এমনটি ঘটেছে।
জর্জিয়া মাত্র পনের বছর বয়স থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ ঔষধ সেবন করতেন। এখন জর্জিয়ার বয়স ১৯। কিন্তু এখনই তার দুচোখের দৃষ্টি ক্ষীন হয়ে এসেছে। নিয়মিত জন্মনিরোধক পিল সেবনের কারণে জমাট বেধে যাওয়া রক্ত পাতলা করার জন্যে এখন তাকে প্রতিদিন নিতে হচ্ছে অ্যাসপিরিন নামের একটি ঔষধ।
জন্মনিরোধ পিল সেবনের পর মেয়ের জন্য চিন্তিত জর্জিয়ার মা কিম বলেন, ‘আমি প্রকৃতপক্ষে জন্মনিয়ন্ত্রণ ঔষধ সেবন এবং বিক্রির বিরোধীরা করছি। এগুলো বিক্রি বন্ধ করা উচিত। যেকোনো কিশোরীর মা-বাবাকে তাদের সন্তানদের এসব জন্মনিয়ন্ত্রণ ঔষধ সেবনে বিরোধিতা করা উচিত।’
জর্জিয়ার মস্তিষ্কের জমাট বেঁধে যাওয়া রক্তে চিকিৎসকেরা জন্মনিয়ন্ত্রণের উপাদান খুঁজে পেয়েছিলেন। এ থেকেই চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হয়েছিলেন জন্মনিয়ন্ত্রণের ঔষধ সেবনেই এমনটি ঘটেছে।
ব্রিটেনের প্রায় ১০ লাখ নারী জেনে-না জেনে প্রতিদিন সেবন করছেন ‘তৃতীয় প্রজন্মে’র জন্মনিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষেধক।
ব্রিটেনে বহুল প্রচলিত জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধের মধ্যে রয়েছে ইয়াসমিন, ফিমোডিন এবং মারভেলন।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জানায়, ‘এইসব ঔষধে এমন উপাদান থাকে যা রক্তের কোষগুলোকে স্থূল করে দেয়। ফলে এগুলো সাধারণ অবস্থার চেয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।’
তৃতীয় প্রজন্মের অত্যাধুনিক এসব জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ সেবনে ফ্র্যান্সে বছরে ১৪জনের মৃত্যু হয়।
যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকেরা নারীদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াচ্ছেন। ব্রিটেনর প্রায় ১০ লাখ নারী জন্মনিয়ন্ত্রণের ঔষধ সেবনে অভ্যস্ত এবং অন্যান্যদের চেয়ে তাদের শরীরে ক্ষতিকর স্থূল রক্তকোষের পরিমাণ বেশি। সুতরাং তারা অধিক মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে বলা যায়।
চিকিৎসকেরা ‘তৃতীয় প্রজন্মের’ বলে পরিচিত এসব জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ সেবনের আগে নারীদের এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে হুঁশিয়ার করছেন। এমনকি অনেকক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঝুঁকির কারণে চিকিৎসকেরা ব্যবস্থাপত্রে তৃতীয় প্রজন্মের জন্ম নিরোধক ঔষধের নির্দেশনা দিচ্ছেন না।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি-র এক প্রতিবেদনে জানা যায়, তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধে সিনথেটিক হরমোন ব্যবহার করা হয়। এর ফলে শরীরে ভ্রুণ জন্মদানের আশঙ্কা থাকে না বলেই চলে।
সুতরাং আগের যেকোনো জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধের চেয়ে এগুলো বেশি কার্যকর। এছাড়া আগের জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধগুলোর চেয়ে এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হওয়ার এর জনপ্রিয়তাও বেশি। কারণ তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ সেবনে স্থূলতা, মাথাব্যথা এবং চুল পড়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button