আর্ন্তজাতিক আদালতে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ দায়ের

Pressইব্রাহিম খলিল: গনহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্গনের অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দাখিল করেছেন এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। গত ৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার বেলজিয়ামের হেগে অবস্থিত আর্ন্তজাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করে মঙ্গলবার লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান মামলার বাদী নাসির আহমদ শাহিন। আদালত প্রথমিকভাবে অভিযোগটি গ্রহন করে শ্রীগ্রই মামলার রেফারেন্স বাদীর নিকট প্রেরন করবে বলে নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলার তদন্ত শ্রীগ্রই শুরু হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করেন প্রবীন আইনজীবি ব্যারিস্টার আলী আজহার ও মিস ক্লাডিয়া।
আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতে দায়ের করা অভিযোগপত্রে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি গনহত্যা, গুম-খুন ও নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত দাখিল করা হয়েছে। তাতে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বিডিয়ার হত্যাকান্ড,২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্তরে হাজার হাজার হেফাজতকর্মী হত্যা, ফেব্রুয়ারী-মার্চে সারাদেশে জামায়াতে ইসলামির একশ‘রও বেশী নেতাকর্মী হত্যা ও বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড, গুম-নির্যাতনের সাথে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সংশ্লিস্টতার অভিযোগ আনা হয় । আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও যাদের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে তারা হলেন, সাবেক স্বরাস্ট্রমন্ত্রী মহি উদ্দিন খান আলমগীর, স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মোস্তাক আহমদ, বোর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ডাইরেক্টর জেনারেল মেজর আজিজ আহমদ, ডিজিএফআই ডাইরেক্টর জেনারেল মেজর মো: আকবর হোসাইন, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার, রেপিড এ্যাকশন বেটালিয়ান র‌্যাব এর ডাইরেক্টর জেনারেল মোখলেছুর রহমান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামসুর রহমান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মুজিবুর রহমান, কর্নেল জিয়াউল আহসান, ল্যাফটেনেন্টে কর্নেল তারেক সাইয়্যেদ মোহাম্মদ, ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ মতিউর রহমান, ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল কিসমত হায়াত, ল্যাফটেন্টে কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ, ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল মখছুরুল হক ও ডিজিএফআইয়ের অফিসার মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম সিকদার।
একি রকম অভিযোগ এনে গত বছর ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে অপর আরেকটি মামলা দায়ের করা হয় আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতে। জামায়াতে ইসলামির যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালত এরি মধ্যে দু দফায় আরো বেশকিছু নতিপত্র ও তথ্য উপাত্ত চেয়েছে মামলার বাদী আবু বকর মোল্লার কাছে। এসব তথ্য ইতিমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবু বকর মোল্লা। এই মামলাটি প্রক্রিয়াধীণ থাকাকালে আরো একটি পৃথক অভিযোগ দাখিল করা হলো।
পৃথিবীতে মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা ও সুবিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের অনুমোদনে আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। পৃথিবীর যে সব দেশের নাগরিকরা নিজ দেশের সরকার দ্বারা দমন পীড়নের শিকার হন কিংবা সুবিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন তারা এ আদালতের মামলা করার অধিকার রাখেন। আর্ন্তজাতিক আদালতে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে। স¤প্রতি সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল বশিরের বিরুদ্ধে গনহত্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছিলো আর্ন্তজাতিক আদালত। একিরকম ভাবে কেনিয়া ও ইউরোপের একটি দেশের সরকার প্রদানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে স্বতন্ত্র এই আদালত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন মামলার বাদী নাসির আহমদ শাহিন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মামলার আইনজীবি ব্যারিস্টার আলী আজহার ও মিস ক্লাডিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আর্ন্তজাতিক স¤পাদক মুহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শাইয়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাবেক আহবায়ক এম এ মালেক, সাবেক সাধারন স¤পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সাধারন স¤পাদক কয়সর এম আহমদ প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button