যেভাবে পর্নোভিডিওর খেসারত দিচ্ছে ব্রিটিশরা
পৃথিবীজুড়ে এখন প্রযুক্তির সমাহার। প্রযুক্তির সহায়তায় মানুষের জীবনের সকল কর্মকা-ই বর্তমানে সহজ হয়ে গেছে। এই প্রযুক্তির আবার ভয়াবহ নেতিবাচক দিকও রয়েছে। প্রযুক্তির কল্যাণে মাঝে মাঝে এমন সব গা-শিউরে ওঠা ঘটনার জন্ম দিচ্ছে তা সাধারণ মানুষকে স্তম্ভিত করছে। বর্তমানে সর্বত্রই ইন্টারনেটে সহজেই মিলছে পর্নো ভিডিও। আর বুঝে হউন না বুঝেই হউক পর্নো ভিডিওতে আসক্ত হচ্ছে অনেক শিশুও।
বুধবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইল কমবয়সী ছেলে-মেয়েদের পর্নো ভিডিওতে আসক্তির এটি ভয়াল চিত্র তুলে ধরেছেন এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে ১৩ বছর বয়সী এক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র কম্পিউটারে পর্নো ভিডিও দেখার পর তা বাস্তবে অনুশীলন করতে গিয়ে ৮ বছর বয়সী তার নিজের বোনেকে ধর্ষণ করেছেন। এই একটি ঘটনা দিয়েই বোঝা যাচ্ছে যে, আধুনিকতার নামে সমাজ আসলে কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, সমাজ কি আসলে আদিমতার দিকে ছুটছে। নাকি আমরা আধুনিক প্রযুক্তিকে ধারণ করতে পারছি না।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ব্লাকবার্ন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এক শুনানিতে ছেলেটি ধর্ষণের কথা অবলিলায় স্বীকার করেছে। ছেলেটি বলেছে আমি কম্পিউটারের এক্স-বক্স থেকে নিয়মিত পর্নো ভিডিও দেখতাম। পরবর্তীতে বাস্তবে এর স্বাদ নেয়ার জন্যে আমি আমার ছোট বোনকে বেছে নিই। ও খুব ছোট। তাই ভাবলাম ও হয়ত এ বিষয়টিতে আপত্তি করেবনা।
দেশটির একটি সংস্থা রেপ ক্রাইসিস চ্যারিটি’র কর্মকর্তা ফিয়োনা আলভিনস বলেছেন, বর্তমানে ইন্টারনেটে শিশু ও কিশোরদের পর্নো ভিডিও দেখা (গ্রোয়িং কনসার্ন) উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌছেছে। তাছাড়া এ বিষয়টি মেয়েদের নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
মিস আলভিনস ল্যাঙ্কাশায়ার টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এতোদিন কিশোর-কিশোরীরা পর্নো ভিডিও দেখছে কিনা সে বিষয়ে বড়রা গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু বর্তমানে এ অবস্থা যে পর্যায়ে পৌছেছে তাতে একটু হলেও টনক নড়েছে তাদের অভিভাবদের। তবে এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ একমাত্র কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
ডেইলি মেইলের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকার চলতি বছরের শেষের দিকে সকল ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে পর্নো সাইটে ঢোকা নিষিদ্ধ করে দিবে। এমনকি ওই সাইটগুলো ব্লক করে দেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হতে পারে।
গত বছরের নভেম্বরেও যুক্তরাজ্যে অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটে। তাতে দেখা যায়, পর্নো ভিডিও দেখেই ১২ বছর বয়সী একটি শিশু তার ছোট বোনকে (১০ বছর) ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি অবলিলায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।
ঘটনাটি এক বছর পর প্রকাশ পেয়েছিল। একারণে তাকে ৩ বছরের জন্য কিশোর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে।