বিক্ষোভে উত্তাল তিউনিশিয়া
তিউনিশিয়ায় বিরোধীদলীয় নেতা মোহাম্মাদ ব্রাহমির হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী তিউনিসে নিজ বাসভবনের বাইরে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত হন ‘মুভমেন্ট অব দ্য পিপল পার্টি’র নেতা ব্রাহমি। তিউনিসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে এবং আরিয়ানার হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। ওই হাসপাতালেই নেয়া হয় ব্রাহমির মৃতদেহ। বিক্ষুব্ধ জনতা সরকার নিপাত যাক স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা সরকারের পদত্যাগও দাবি করে।
বামপন্থী দলগুলোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের বিক্ষোভের পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের সমর্থনে ইসলামপন্থী দলগুলোও রাজপথে তাদের শক্তি দেখিয়েছে।পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ-ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। তিউনিস বিমানবন্দার থেকে কোনো ফ্লাইট ছেড়ে যায়নি এবং কোনো ফ্লাইট অবতরণও করেনি। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে তিউনিশিয়ায় বিরোধীদলীয় নেতা ব্রাহমি হত্যাকা-ের সঙ্গে ছয়মাস আগে ঘটা আরেকটি রাজনৈতিক হত্যাকা-ের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি আরব জাতীয়তাবাদী দল পপুলার ফ্রন্ট পার্টির নেতা চোকরি বেলাইদকে রাজধানীতে গুলী করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই হত্যাকা-ে ব্যবহৃত গুলী ও বুলেটের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ব্যবহৃত গুলীর হুবহু মিল রয়েছে বলে স্বরারষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুতফি বিন জেদ্দু এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যে নাইনএমএম স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে বেলাইদকে হত্যা করা হয়েছিল ব্রাহমির ক্ষেত্রে সেই একই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।” দুর্বৃত্তরা পর পর ১৪টি গুলী করে বৃহস্পতিবার মধ্যবামপন্থী নেতা ব্রাহমিকে হত্যা করে বলে সেদিনই সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল।
তিউনিশিয়ার সালাফি মতের অনুসারি ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠী বাওবাকার হাকিম এ হত্যাকান্ডে জড়িত বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে। ওই গোষ্ঠীটি পাশের দেশ লিবিয়া থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র তিউনিশিয়ায় স্থানান্তর করেছিল বলে জনশ্রুতি আছে। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ব্রাহমি খুনকে একটি ‘কাপুরষচিত হত্যাকান্ড’ বলে অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।