শমসের মবিনকে নিয়ে সিলেট বিএনপিতে অস্থিরতা, বিভক্তি

Sylhetসাইফুর তালুকদার: সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমান এবং নিখোঁজ বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর পর কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীর হস্তক্ষেপের পর সিলেট বিএনপিতে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে এবং ধীরে ধীরে বিভক্তিও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
ইলিয়াস আলীর হাতে গড়া সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে ইলিয়াস অনুসারীদের বাদ দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই সিলেট বিএনপিতে কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। এনিয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মুবিনের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল, তাঁর ছবিতে জুতাপেটো, সংবাদ সম্মেলন ও শোকজের ঘটনাও ঘটেছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ নিয়ে সিলেট বিএনপি পরিবাওে বিরাজ করছে অস্থিরতা।
সর্বশেষ সোমবার আগের কমিটি পুনর্বহাল, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে সিলেট বিএনপির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া এবং কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীমকে বহিষ্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। সর্বশেষ বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরীতে ঝাড়ু মিছিল ও ছবিতে জুতাপেটা করায় ঘটনায় কারা জড়িত তা ৩ দিনের মধ্যে জানাতে এবং ঝাড়– মিছিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন দলের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারন সম্পাদক একেএম তারেক কালামকে শোকজ করেছে জেলা বিএনপি।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ট সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম করার অধিকার সবার আছে। তবে ঝাড়ু মিছিল করায় দলের শৃংখলা ভঙ্গ হয়েছে। এজন্য শোকজ করা হয়েছে।
সদর উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম তারেক কালাম বলেন, আমার কাছে এখনো চিঠি পৌঁছেনি। তবে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমাকে ফোনে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। আমি তো ঝাড়– মিছিল বা ছবিতে জুতাপেটা করার সময় উপস্থিত ছিলাম না। আমাকে বলা হয়েছে কারা করেছেন তাদের খুঁজে বের করতে। জেলা নেতারা তো পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখেও চিনতে পারেন। তবে, এবিষয়ে আমাকে চিঠি দিয়ে এবিষয়টি প্রমাণ করেছেন আমরাই বৈধ কমিটি এবং নতুন কথিত কমিটির চেয়ে আমরা অনেক শক্তিশালী। তাই ঝাড়ু মিছিল ও ছবিতে জুতাপেটাকারীদের খোঁজার দায়িত্ব নতুন কমিটিকে না দিয়ে আমাদের দেয়া হয়েছে।
এর আগে নতুন কমিটি ঘোষণার পর শুক্রবার বিকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে শমসের মবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করার প্রস্তুতি নেয় সদর উপজেলা বিএনপি। বিক্ষিপ্তভাবে দুটি ঝাড়ু মিছলও বের করা হয় সমাবেশস্থলে। পরে নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হস্তক্ষেপে নেতারা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পরিবর্তন করে ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে মিছিল করেন। এসময় আরিফুল হক চৌধুরী সমস্যা সমাধানে দুই দিনের সময় নেন।
কিন্তু এর দুদিন পর রবিবার তৃণমূল বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনর ব্যানারে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে শমসের মুবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরীতে ঝাড়ু মিছিল ও শমসের মুবিনের ছবিতে জুতাপেটা করে বিক্ষোব্ধ কর্মীরা। এর পর দিনই সোমবার সদর উপজেলা বিএনপির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি পুরন কমিটি ভেঙ্গে সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির ১৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এর পর থেকে সাবেক কমিটির নেতাকর্মীরা আন্দোলন করে আসছেন। ইতোমধ্যে তারা শমসের মবিনের বিরুদ্ধে দুইু দফা ঝাড়ু মিছিল বের করে ও ছবিতে জুতাপেটা করা হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button