মিশরীয় জাতিকেই গণহত্যা করা হয়েছে : এরদোগান

Erduganমিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক এবং ইসলামি ব্রাদারহুডের ওপর গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।মুসলিম বিশ্বের স্পষ্টভাষী ও জনপ্রিয় নেতা তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েব এরদোগান নজিরবিহীন ভাষায় এর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘মিশরে গণতন্ত্রকে গণহত্যা করা হয়েছে। জাতীয় আকাঙ্ক্ষাকে গণহত্যা করা হয়েছে এবং এখন জাতিকেই গণহত্যা করা হয়েছে।’শনিবার নিরস্ত্র রাজধানী কায়রোর নসর সিটিতে মুরসি সমর্থকদের ওপর নির্বিচার গুলিতে অন্তত ১২০ জন নিহত এবং ৫ সহস্রাধিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬১ জনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের ইসলামপন্থি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েব এরদোগান আরো বলেছেন, ‘মিশরের এই গণহত্যার পরও যারা নীরব রয়েছে তাদের হাতে লেগেছে রক্তের দাগ, রক্ত তাদের মুখেও লেগেছে।’জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মহাসচিব তীব্রভাষায় মিশরে সহিংসতার উত্থানের নিন্দা জানাচ্ছে, যাতে শুক্রবার ও শনিবার বহু লোক নিহত এবং শ’ শ’ লোক আহত হয়েছেন।’তিনি ভিকটিমদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং আশা করেন, আহতরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে।সংলাপের মাধ্যমে মতভিন্নতা নিরসনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব মিশরীয়দের প্রতি আহ্বান জানান।গণহত্যার নিন্দা তীব্র জানিয়েছেন মিশরের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আল বারারি। শনিবার এক টুইটার বার্তায় বারদিই বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও হত্যার আমি তীব্র নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই মুখোমুখি অবস্থানের নিরসন করার জন্য আমি সব উপায়ে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আল্লাহ মিশরকে রক্ষা করুন এবং ভিকটিমদের ওপর রহমত করুন।’মিশরের বিশ্বখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-আজহার ইউনির্ভাসিটির গ্রান্ড ইমাম আহমেদ আল-তাইয়েবও এ ঘটনার নিন্দা জানান এবং নিহতদের শহীদ বলে মন্তব্য করেন।এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আজকের ঘটনায় যারা শহীদ হয়েছেন আমি তাদের জন্য শোক প্রকাশ করছি এবং হত্যার নিন্দা জানাচ্ছি।’গ্রান্ড ইমাম এ ঘটনার দ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন এবং যারাই দায়ী হোক না কেন তাদের শাস্তির দাবি জানান।মুসলিম ব্রাদারহুডের মুখপাত্র গিহাদ আর হাদ্দাদ বলেছেন, মিশরীয় সামরিক বাহিনী সকল রেড লাইন অতিক্রম করেছে। তারা নারী ও শিশুদেরও হত্যা করেছে এবং শ’ শ’ ব্রাদারহুড কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘বৈঠক করার কোনো অবস্থা নেই। এখন শূন্য যোগফল সমীকরণ (যেখানে একপক্ষ জিতলে অন্য পক্ষ পরাজিত হয়) অবস্থা বিরাজ করছে। এই সমীকরণ হয় তাদের আমাদের পক্ষে না হয় তাদের পক্ষে যাবে। হয় আমরা সামরিক অভ্যুত্থানকে উল্টে দিয়ে সাংবিধানিক বৈধতায় ফিরে যাব অথবা আমরা শাহাদাত অর্জনের চেষ্টা করব।’যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিশরে এখন যা ঘটছে তার প্রভাব হবে চিরস্থায়ী।’তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাবেশ করা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে মিশরীয় কর্মকর্তাদের নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’এ ঘটনা মিশরের গণতন্ত্রায়ন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে জন কেরি।এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন মিশরে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button