মিশরে সহিংসতায় দেশে বিদেশে নিন্দার ঝড়
মশরে শনিবারের সহিংসতায় ১শ ২০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশে বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের অব্যাহত বিক্ষোভ সমাবেশে সামরিক হামলায় ওই হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় আরো সাড়ে চার হাজার মানুষ।
অন্তবর্তী সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আল বারাদি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সমাবেশে সেনা ব্যবহার বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।
শনিবার কায়রোতে ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।.
বিক্ষোভ সমাবেশে সেনা অভিযানের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘাত নিরসনের জন্য কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আল্লাহ মিশরকে হেফাজত করুক এবং নিহতদের আত্মা শান্তি পাক।’ শনিবার এক ট্ইুটার বার্তায় তিনি এ কথা জানান।
হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় নেতা আহমেদ আল তাইয়েব। তিনি এ ঘটনায় জরুরি ভিত্তিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
মিশরের সহিংসতায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে আল বারাদির দল ন্যাশনাল সালভেশন ফ্রন্ট। পাশাপাশি তারা কায়রোর রাব্বা আল আদাবিয়িাহ মসজিদের চারপাশে বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য মুসলিম ব্রাদারহুডের নিন্দা করে।
শনিবারের ওই সহিংসতার ঘটনার জন্য সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে প্রেসিডেন্ট মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড। তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ হামলা চালায় বলে তারা অভিযোগ করে।
দলের মুখপাত্র গিয়াদ এল হাদ্দাদ বলেন, ‘এখন আর আলোচনার কোন সুযোগ নেই। হয় আমরা থাকবো নয় ওরা। হয় আমরা সামরিক অভ্যূত্থানকরীদের হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো, নয় মরে যাবো।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মিশরে এখন জটিল অবস্থা বিরাজ করছে।দু বছর আগে স্বৈরশাসক হুসনি মোবারককে হটিয়ে সেখানে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচত প্রেসিডেন্ট মুরসি ক্ষমতায় গিয়েছিল। সম্প্রতি সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যূত করেছে।এখন আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।’
তিনি আরো বলেন, মিশরীয় কর্তৃপক্ষের জনগণকে শান্তিপূর্ণ ও স্বাধীনভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।
মিশরের অব্যাহত সহিংসতা দেশেটির পূনর্গঠন ও গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে এবং অঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলবে বলেও মন্তব্য করেন জন কেরি।
মিশরের ভয়াবহ সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টোন বলেন, পরিস্থিতির উন্নয়নে দেশে দ্রুত বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা উচিত।
একই সঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট মুরসিসহ সকল রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেন। সকল পক্ষের প্রতি সহিংসতা বর্জনেরও আহ্বান জানান তিনি।
কায়রোর সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইপ এরদোগান বলেন, ‘মিশরের গণতন্ত্র এবং জাতীয় আশা আকাঙ্খা আজ ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।এখন মিশর জাতিও ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’