বেলজিয়ামে মরণাপন্ন শিশুদের জন্য স্বেচ্ছামৃত্যু আইন পাস
দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশু, যারা অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছে, কিন্তু তাদের শারীরিক যাতনা কমানোর মতো আর কোনো ডাক্তারি প্রচেষ্টা বাকি নেই, তারা এখন থেকে স্বেচ্ছায় কম কষ্টে মৃত্যুবরণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে ডাক্তাররা তা বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে এক আইন পাস করেছে বেলজিয়ামের জাতীয় সংসদ। কিন্তু এই আইনের সমালোচনা করছে অনেকেই।
বেলজিয়ামে আগে থেকেই মার্সি কিলিং বা যন্ত্রণামুক্তির জন্য স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমোদন দিয়ে একটি আইন ছিল তবে তা ছিল শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।
বড়দের মতো শিশুরাও কেন এই সুযোগটি নিতে পারবে না এই নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে তর্ক-বিতর্ক চলছিল বেলজিয়ামে।
অসুস্থ মৃত্যুপথযাত্রী শিশুরা যদি কম কষ্টে মরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই সব শিশুদের বাবা-মা বা অভিভাবকরাও যদি এতে সম্মতি দেয় তাহলে বেলজিয়ামের ডাক্তাররা এখন থেকে শিশুদের কম কষ্টে মৃত্যুবরণের ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবে।
দেশটির সংসদে গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভোটাভুটির মাধ্যমে ৮৬ ভোট পেয়ে এই আইনটি পাস হয়। বিপক্ষে ভোট পরে ৪৪টি এবং ১২ জন ভোটদানে বিরত থাকেন।
এই আইন পাস হওয়ার ফলে এখন থেকে যে কোনো বয়সের অসুস্থ শিশুই নিজের মৃত্যুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ফলে এখন বেলজিয়াম হলো প্রথম সেই দেশ যেখানে যে কোনো বয়সী রোগী যারা দূরারোগ্য রোগে যন্ত্রণা পাচ্ছে, তারা স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অনুমোদন পাবে।
আইনটি পাস হওয়ার পর সংসদের গ্যালারী থেকে একজন দর্শক আইন প্রণেতাদের উদ্দেশ্য ‘খুনী’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এই আইনটির বিরোধিতা করেছে ব্রাসেলসের আর্চবিশপ এবং দেশটির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল।
বেলজিয়ামের এন্টেরপ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এথিকস এর প্রধান বলছেন, অনেক ডাক্তারের পক্ষেই প্রাণ নেয়ার কাজটা সহজ হবে না।
বেলজিয়ামে অনেক ডাক্তার রয়েছে যারা মনে করে এই কাজটি করা তাদের জন্য অতীব কঠিন হবে। কেননা, তারা কেউই ইচ্ছেকৃতভাবে মানুষের জীবনকে সমাপ্ত করে দিতে প্রশিক্ষিত নয়।
দেশটিতে বয়স্ক মানুষদের জন্য কম কষ্টে মৃত্যুবরণের আইন চালু রয়েছে গত ১২ বছর ধরে।