রাস্তায় ফেলে যাওয়া মায়ের আশ্রয় মিলেছে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে
মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান: বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় রাস্তায় ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা মায়ের আশ্রয় মিলেছে গাজীপুরের বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ গত শনিবার সকালে অসহায় আরাফাতুন নেছাকে (৮৫) গাজীপুর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের সমন্বয়কারী মো. রবিউল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন।
গত ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে দূরপাল্লার একটি বাস থেকে বৃদ্ধা আরাফাতুন নেছাকে তার পুত্র শামীম ও শাহিন বরিশালের গৌরনদীর কসবা ব্রিজের কাছে ফেলে যায়। রোগাক্রান্ত বৃদ্ধা ১০ দিন ধরে এক কাপরেই রাস্তায় পরে ছিল। এ সময়ে তার পরিধেয় কাপর নষ্ট হয়ে যায়। ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি কেবিনে রেখে তার চিকিৎসা করা হয়। আট দিন চিকিৎসার পর তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন।
চিকিৎসক সেকান্দার আলী মোল্লা ও নার্সরা জানান, আরাফাতুন নেছা দিন রাত সব সময় পুত্র শাহিন ও শামীমের নাম ধরে ডাকতেন। তার ডাকে পেটের সন্তানরা সারা না দিলেও গাজীপুর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও গিভেন্সি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খতিব আব্দুল জাহিদ মুকুল সহায়তার হাত বাড়ান। তিনি ওই কেন্দ্রের সমন্বয়কারী রবিউল ইসলামকে শনিবার সকালে অ্যাম্বুলেস নিয়ে গৌরনদী হাসপাতালে পাঠান আরাফাতুন নেছাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার খবর শুনে আরাফাতুন নেছা উৎফুল্ল হয়ে উঠেন। তিনি জিকির করতে করতে হাসপাতালের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। সবাই তাকে তুলে দেন অ্যাম্বুলেন্সে।
আরাফাতুন নেছা জানান, কুমিল্লার শামীম ও শাহিন নামে দুই পুত্র তাদের বোনের বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এখানে নিয়ে এসে তাকে গৌরনদী সড়কের কাছে ফেলে যায়। তবে কুমিল্লার কোথায় তার বাড়ি কিংবা তার মেয়েদের বাড়ি কোথায় তা তিনি স্পষ্ট করে জানাতে পারেন নি।
রবিউল ইসলাম জানান, যতদিন আরাফাতুন নেছা বেঁচে থাকবেন ততদিন তিনি বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকতে পারবেন।