প্রেসিডেন্টের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না

ইউক্রেনের স্পিকারের পদত্যাগ

Ukraineইউক্রেনের সঙ্কটাপন্ন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে চলে গেছেন বলে বিরোধীদলীয় নেতা ভিটালি কিৎশ্চকো জানিয়েছেন। এক সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ সহিংসতার কারণে প্রেসিডেন্ট দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন বলে খবরের মধ্যে কিটশ্চকো পার্লামেন্টে তার রাজধানী ত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশবাহিনীকে লেলিয়ে দেয়ার ঘটনায় অবিলম্বে ইয়ানুকোভিচের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানান। কিৎশ্চকো বলেন, বর্তমানে পার্লামেন্টই হচ্ছে দেশের একমাত্র বৈধ প্রতিষ্ঠান। বাসস/এএফপি।
শনিবার সরকারপন্থী পার্লামেন্টের স্পিকার ভোলোদোমির রাইবাক স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তার পদ থেকে ইস্তেফাপত্র জমা দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে স্পিকার এ পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন। ওলেক্সান্ডার টুরচেনভকে ইয়ানুকোভিচের অনুগত স্পিকারের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের অফিস দখল করে নেয় এবং বিরোধী দল আগামী মে মাসের মধ্যেই নির্বাচন দাবি করে। রাজধানীতে ব্যাপক রক্তপাতের ফলে রাশিয়াপন্থী এ নেতার ক্ষমতা দ্রুত পতন ঘটার মধ্যে বিরোধীরা এ দাবি জানায়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ইয়ানুকোভিচের দফতরে প্রবেশ করে তার প্রবেশপথের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা দফতরের মধ্যে অবস্থান করছে, তবে তারা বিক্ষোভকারীদের বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে না। রাজধানীর উপকণ্ঠে প্রেসিডেন্টের বাসভবনটিও দৃশ্যত পরিত্যক্ত বলে মনে হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্র বলছে, প্রেসিডেন্ট এখনো ইউক্রেনে রয়েছেন, তবে তিনি কিয়েভে আছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
বিরোধী দলের বিক্ষোভ ও দাবির মুখে অবশেষে মতা ছাড়তে সম্মত হয়েছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। ইউক্রেইনে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে শান্তি চুক্তি এবং আগাম নির্বাচন ঘোষণার পর দেশটিতে আপাত স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। এর আগে রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রস্থলে দুই দিনের সহিংসতায় অন্তত ৭৭ জন নিহত হয়।
শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী বিরোধী দলের অনেক দাবি মেনে নেয়ার পর শান্তিচুক্তিটি সই হয়।
চুক্তি অনুযায়ী দেশটির রাশিয়াপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ মতা ছেড়ে আগাম নির্বাচন ও একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে সম্মত হয়েছেন। অপর দিকে আইন পরিবর্তনের পে পার্লামেন্টের সমর্থন প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের প্রতিপ কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ুলিয়া তিমোশেঙ্কোর মুক্তির পথও প্রশস্ত করেছে। শান্তিচুক্তি সই করার পর শুক্রবার রাতে বিরোধীদলীয় নেতারা কিয়েভের স্বাধীনতা চত্বরের একটি মঞ্চ থেকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ভাষণ দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় কিয়েভের প্রধান স্কয়ারে প্রায় ৪০ হাজার লোক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়। এর আগের ৪৮ ঘণ্টা পুলিশ ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের রক্তয়ী সংঘর্ষ স্থানটি দোজখে পরিণত হয়েছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প থেকে পোল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই শান্তিচুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেন। মূলত তাদের তৈরি করা পরিকল্পনাই ইউক্রেইনের সরকার ও বিরোধীপ অনুমোদন করে। চুক্তিতে সাক্ষী হিসেবে সই করেছেন এসব দেশগুলোর মধ্যস্থতাকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা। তবে রাশিয়া সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে ইইউর সাথে পূর্বপরিকল্পিত বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে ইয়ানুকোভিচ রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যচুক্তি করেন। এতে তার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা গত দুই দিন ব্যাপক রক্তয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button