৫ বছরে বিদেশে গেছেন প্রায় ২৫ লাখ কর্মী
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে মোট ১৫৯টি দেশে রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ২৫ লাখ কর্মী পাঠানো হয়েছে। প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ হচ্ছে ৬১ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিশ্বের ১৫৯টি দেশে ৮৭ লক্ষাধিক কর্মী রয়েছেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থানকে সরকার থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিধায় সরকার বিদ্যমান শ্রমবাজারের পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে যেখানে বিশ্বের মাত্র ৯৭টি দেশে কর্মী পাঠানো হতো, সেখানে বর্তমান সরকার আরও নতুন ৬২ দেশে কর্মী পাঠানোসহ ১৫৯টি দেশে পাঠিয়েছে। অতীতের যে কোনো সরকারের সময়ের তুলনায় গত ৫ বছরে আমরা কয়েক গুণ বেশি কর্মী পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।
সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, একমাত্র আরব আমিরাত ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোন দেশে কর্মী পাঠানো বন্ধ নেই। আর জি টু জি চুক্তির মাধ্যমে মালয়েশিয়া ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে। অন্যান্য দেশে পাঠানোর চেষ্টা চলছে। মন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরকারিভাবে জি টু জি প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় এ পর্যন্ত তিন হাজার ২৩ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিসা আসছে এবং নিয়মিতভাবে কর্মীরা মালয়েশিয়ায় গমন করছেন।
আওয়ামী লীগের আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সৌদি আরবে বৈধভাবে গমনকারী কর্মীর সংখ্যা ২৬ লাখের অধিক। বৈধ কর্মীর পাশাপাশি অবৈধ পন্থায় কর্মী গমন অথবা চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে অবস্থান এবং অধিক বেতনের আশায় নিয়োগকর্তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমানে সৌদি আরবে অনেক কর্মী অবৈধ হয়ে পড়েছেন। এসব অবৈধ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সৌদি সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের সফল শ্রম কূটনৈতিক তৎপরতা এবং উভয় দেশের প্রতিনিধি দলের সফল আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সঙ্কটের সমাধান সম্ভব হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৩১শে মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত আট সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের সৌদি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের আলোকে সৌদি সরকার ওই দেশে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীদের বৈধকরণ সুবিধা প্রদান করে। এ পর্যন্ত প্রায় আট লাখের অধিক অবৈধ বাংলাদেশী বৈধ হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করেছে। এটা বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা।