টি-২০ বিশ্বকাপ
নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী ও রোবট
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী। আল কায়দাসহ বৈশ্বিক, আঞ্চলিক, দেশীয় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কথা মাথায় নিয়েই এবারের নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিরাপত্তায় প্রথমবারের মতো মাঠে থাকবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুটি রোবট। পুলিশ-র্যাবের সাত স্তরের নিরাপত্তার বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীও দায়িত্ব পালন করবে। এবারই প্রথম রাজধানীর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের চার পাশে বিশেষ ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হচ্ছে। পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। পুলিশের হাতে থাকবে স্নাইপার রাইফেল। আজ রোববার নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রথম মহড়া অনুষ্ঠিত হবে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচের মধ্য দিয়ে আগামী ১৬ মার্চ ঢাকায় শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ৬ এপ্রিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্য ভেন্যু চট্টগ্রাম ও সিলেটেও নেওয়া হবে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার জানিয়েছে, নির্বিঘেœ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে সম্ভাব্য সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর আগেও বাংলাদেশ বড় আসর নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করে আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জন করেছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। পুলিশের মিরপুর বিভাগের ডিসি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর। নিরপত্তার দায়িত্বে অত্যাধুনিক দুটি রোবটও থাকবে। আইসিসির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে নিরাপত্তার খুঁটিনাটি নিয়ে বৈঠক হয়েছে।আমাদের আয়োজন দেখে তারা সন্তুষ্ট। নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশ-র্যাবের দুই সহগ্রাধিক সদস্য নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন। মাঠের বাইরে দায়িত্ব পালন করবে র্যাব। থাকবেন পুলিশের সোয়াট টিমের সদস্যরা। শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের চার পাশে পুলিশ বিশাল উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার বসাবে। সেখান থেকে স্টেডিয়ামের আশপাশের উঁচু ভবন ও সড়কে নজরদারি করা হবে।
এবারই প্রথমবারের মতো শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পৃথক নিয়ন্ত্রণ ক খোলা হবে। এই নিয়ন্ত্রণ ক থেকে আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। তাৎণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ কে পুলিশের জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম থাকবে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তার অংশ হিসেবে প্রথমে কারা হুমকি হতে পারে, তার তালিকা করা হয়েছে। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেসব দেশ অংশ নেবে, সেসব দেশের বিবেচনায় কোনো হুমকির আশঙ্কা থাকতে পারে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি নিরাপত্তা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আল কায়দার হুমকির বিষয়টিও মাথায় রাখছে আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী। বাংলাদেশে যেসব উগ্রপন্থি গোষ্ঠী নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, তাদের ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, মূলত বোমা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণে ডিএমপির দুটি রোবট প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া স্নাইপার রাইফেল তিন কিলোমিটার দূরে টার্গেট করা ব্যক্তিকে নিখুঁতভাবে গুলি করতে সম।দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, এবার মাঠে দর্শক প্রবেশের ক্ষেত্রে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি দল প্রবেশপথে দায়িত্ব পালন করবে। অনেকে ভিআইপি পরিচয় দিয়ে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে অধিক সতর্ক থাকবে পুলিশ। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর কোনো স্বজন যাতে নিজেদের পরিচয় ব্যবহার করে কোনো বাড়তি সুবিধা না নেন, এ ব্যাপারে খেয়াল রাখবে পুলিশ। নিরাপত্তাকে ঘিরে সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও দায়িত্ব পালন করবেন।