নূরের গাড়িবহরে হামলা
আরেক আসামির লাশ মিলেছে বগুড়ায়
বগুড়ায় অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফনের এক মাস তিন দিন পর নীলফামারী সদর থানায় পাঠানো লাশের ছবি দেখে নিখোঁজ শিবিরনেতা মহিদুল ইসলামের লাশ সনাক্ত করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। গত ১ ফেরুয়ারি বগুড়া আঞ্জুমানে মফিদুলে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে মহিদুলের লাশ দাফন করা হয়েছিল। নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের সুখধন গ্রামের ক্বারী আনোয়ার হোসেন ছেলে মহিদুল। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য ছিলেন।
এ নিয়ে নূরের গাড়িবহরে হামলা মামলার তিন আসামির লাশ পাওয়া গেল। ইতোপূর্বে এক নম্বর আসামি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রাব্বানির লাশ পাওয়া গিয়েছিল ১৮ জানুয়ারি। এরপর ছাত্রদল নেতা ৪ নম্বর আসামি আতিকুল ইসলাম আতিকের লাশ পাওয়া যায় ২০ জানুয়ারি।
গত ১৪ ডিসেম্বর জেলা সদরের রামগজ্ঞ বাজারে এমপি আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা ও আওয়ামী লীগের চার নেতাকর্মী হত্যার মামলার নয় নম্বর আসামি ছিলেন মহিদুল।
মহিদুল ইসলামের খালা মমেনা বেগম, মামি রাশেদা খানম, বড় বোন আম্বিয়া ও আফরোজা বেগম জানান, ওই ঘটনার পর থেকে মহিদুল ও তার বন্ধু আতিক টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার দেবিডুবা গ্রামে সাথিয়া স্কুলের নিকটবর্তী আতিকের আত্মীয় বাবুল খানের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। গত ১৩ জানুয়ানি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে মহিদুল ও আতিককে গ্রেফতার করে। এর পর ২০ জানুয়ারি আতিকের রক্তাক্ত লাশ নীলফামারীর সৈয়দপুরে পাওয়া গেলেও এত দিন মহিদুলের কোনো সন্ধান মিলেনি।
তারা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারী থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ লাশের একটি ছবি দেখিয়ে বলেন, এই ছেলেটির লাশ গত ১ ফেরুয়ারি বগুড়ার মোকামতলায় পাওয়া যায়। পরে তার কোনো পরিচয় না পেয়ে তাকে অজ্ঞাত পরিচয় দেখিয়ে দাফন করা হয়েছে। ছবিটি দেখে আমরা সেটি মহিদুলের বলে সনাক্ত করি।
বগুড়া মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, গত এক ফেব্রুয়ারি বগুড়া মোকামতলা রহবল বাজারের উত্তর পাশে একটি উঁচু জমি থেকে এক অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের মাথার বাম পাশে কানের উপরে গুলি ঢুকে তা ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। দেশের সব থানায় লাশের ছবিসহ ম্যাজেজ দেয়ার পরে মঙ্গলবার জানা গেল, তার বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার রামগঞ্জ গ্রামে।
নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বাবুল আকতার জানান, ছবি দেখে মহিদুল ইসলামের পরিবারের লোকজন তাকে সনাক্ত করেছে।
২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জেলা সদরের রামগজ্ঞ বাজারে নীলফামারী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা এবং পরে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে ১৮ দলের সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের চারজনসহ পাঁচজন নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ একটি ও নিহত কৃষকলীগ নেতা খোরশেদ আলম চৌধুরীর ভাই রাশেদ আলম চৌধুরী অপর একটি মামলা করেন। নিহত খোরশেদ আলম চৌধুরীর ভাইয়ের দায়ের করা মামলার নয় নম্বর আসামি ছিলেন শিবির নেতা মহিদুল।