সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীর অনন্য দৃষ্টান্ত
মন্ত্রী হওয়ার পর নানা কারণে মিডিয়ায় আলোচনায় থাকা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী সোমবার নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। মানব সেবায় নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসকদের সম্মান জানাতে একজন প্রবীন চিকিৎসককে পা ছুঁয়ে সালাম করলেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী । বললেন, প্রকৃত মানবতাবাদী চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান জানাতেই আমার এই মস্তক অবনত শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।
সোমবার বিকেলে নগরীর বালুচরে সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন মন্ত্রী। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দুপুর থেকেই হার্ট ফাউন্ডেশনে অপেক্ষমান ছিলেন সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের বেশ কিছু কর্মকর্তাও। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মন্ত্রী পূর্ণ প্রটোকলসহ পৌঁছান হাসপাতালে।
মন্ত্রী গাড়ী থেকে নামার পরই তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এগিয়ে যান অভ্যর্থনাকারীরা। কিন্তু ফুল না নিয়ে মন্ত্রী এগিয়ে যান সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি, প্রবীণ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এমএ রকিবের দিকে। মাথা নীচু করে পায়ে হাত দিয়ে মন্ত্রী সালাম করেন ডা. এমএ রকিবকে। জবাবে আবেগাপ্লুত ডা. এমএ রকিব এ সময় দু’হাতে জড়িয়ে ধরেন মন্ত্রীকে।
পরে বক্তব্য দানকালে মন্ত্রী তার এই শ্রদ্ধা নিবেদনের কারণও ব্যাখ্যা করেন। বলেন, আমাদের দেশে ডাক্তাররা ডাক্তার হন জনগণের টাকায়। এরপর চেম্বারে বসে ইচ্ছেমত ভিজিট নেন। যে টেস্ট করার প্রয়োজন নেই, তাও করান রোগীকে। রোগীর পকেট কাটাই যেন তাদের উদ্দেশ্য। ঐ সব ডাক্তারদের মনে মানবপ্রেম নেই, দেশপ্রেম নেই। টাকা রোজগারই এদের কাছে মূখ্য। জনগণ এ ধরনের ডাক্তারকে ‘বুচার’ বা ‘কসাই’ বলে মনে করে।
মন্ত্রী বলেন, এর বিপরীত চিত্র বিরল হলেও আছে। অনেক ডাক্তার নিজের আরাম আয়েশ ত্যাগ করে আর্ত মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন। এ ধরনের একজন মানবতাবাদী একজন চিকিৎসক ডা. এমএ রকিব। আমি তার সম্পর্কে জানি। জীবনে খ্যাতি, যশ, অর্থ কোন কিছুর অর্জনের বাকী নেই ডাক্তার রকিবের। তারপরও শুধু মানবতার কল্যাণে আশি বছর বয়সেও তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সিলেট ডায়বেটিক হাসপাতাল, সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশনসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে এখনো নিরলস ও নিঃস্বার্থভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তার রকিব। এ ধরণের মানবতাবাদী চিকিৎসক আমাদের সমাজে বিরল। মানব সেবায় নিবেদিতপ্রাণ সকল চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেই আমি ডা. এমএ রকিবের পায়ে ধরে সালাম করেছি।