কূটনীতিকগণের সম্মানে জামায়াতের ইফতার পার্টি
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স ও কূটনীতিকগণের সম্মানে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এ ইফতার পার্টিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাই কমিশনার মি. গিবসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন জন ডেনি ল্ইুস, সৌদি আরবের রাষ্ট্্রদূত ড. আবদুল্লাহ বিন নাসের আল-বুসাইরী, পাকিস্তানের হাইকমিশনার মি. আফরাসিয়াব, জার্মান রাষ্ট্রদূত মি. আলব্রেক্ট কনজি, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন মি. বেলনিকক, কানাডার চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মি. আল নূর মাহেরাল, ভ্যাটিক্যান সিটির চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স, ভুটানের রাষ্ট্রদূত দাসহো ব্যাপ কিসাং, ইরান, ভারত, ফিলিস্তিন, তুরস্ক, কোরিয়া, সিংগাপুর, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকগণ ও এনডিআই-এর কান্ট্রি ডিরেক্টার উপস্থিত ছিলেন।
এ ইফতার পার্টিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আমিনুল ইসলাম, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, মোঃ আবদুর রব, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা শামসুল ইসলাম এমপি, কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মোবারক হোসাইন, কর্মপরিষদ সদস্য লস্কর মোহাম্মদ তাসনীম প্রমুখ।
ইফতারির পূর্বে দেয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কে এম নাজির আহমদ জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতে সাড়া দিয়ে ইফতার মাহ্ফিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্সসহ কূটনীতিকগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ মাহ্ফিলে আপনাদের উপস্থিতি মাহফিলকে স্বার্থক করেছে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমসহ জামায়াতে ইসলামীর বহু নেতাকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা নোংরা রাজনীতির শিকার। এ জন্য আমাদের অন্তরে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। এ সন্ধ্যায় আমরা তাদের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও মানবাধিকার লংঘন করে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগে আমাদের নিরপরাধ নেতৃবৃন্দের বিচারকে সমর্থন বা অনুমোদন না করে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য অধ্যাপক নাজির আহমদ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানান।
নাজির আহমদ আরো বলেন, পবিত্র রমযান মাস হলো সর্বশেষ আসমানী কিতাব পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস। পবিত্র কুরআন পূর্বে নাজিলকৃত সকল আসমানী কিতাব এবং হযরত ইব্রাহিম (আঃ), হযরত মুসা (আঃ), হযরত ঈসা (আঃ)সহ সকল নবী ও রাসূল (সাঃ) গণকেই স্বীকৃতি দেয় এবং সম্মান করতে শিক্ষা দেয়।
তিনি পবিত্র কুরআনের সূরা হুজরাতের ১৩ নং আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আল্লাহ একজন পুরুষ ও একজন নারীর থেকে মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষকে জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছেন যাতে মানুষ একজন অপরজনকে চিনতে পারে। সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে সব চাইতে বেশি সম্মানিত যিনি সব চাইতে বেশি তাকওয়ার গুণসম্পন্ন। আল্লাহ সব কিছু জানেন ও সব বিষয়ে সতর্ক। সকল মানুষ একই উৎস থেকে জন্ম গ্রহণ করেছে। পবিত্র কুরআন মানুষকে ভ্রাতৃত্ব ও বদান্যতা শিক্ষা দেয়। তিনি উল্লেখ করেন, রোযা মানুষকে ধৈর্য, সহনশীলতা, সংযম, আত্মশুদ্ধি শিক্ষা দেয়। এ গুণগুলো সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা এক সংঘাতময় পৃথিবীতে বাস করছি। মানুষ শান্তির অন্বেষণ করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে শোষণ, জুলুম-নির্যাতন ও মানবাধিকার চরমভাবে লংঘিত হচ্ছে। এ সকল অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে হলে সৃষ্টিকর্তার দেয়া বিধানের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার কায়েমের মাধ্যমেই শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।
নাজির আহমদ বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমরা যেন চরমপন্থা থেকে মুক্ত হয়ে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ কায়েম করে মানবতার সেবা করতে পারি। এ রমযান মাসে আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমরা যেন আমাদের ওপর দেয়া দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করে সামাজিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি।