কপিরাইট মামলায় জিতল অ্যাপল
স্যামসাংকে জরিমানা ৯৩ কোটি ডলার
আব্দুল্লাহ জায়েদ: অবশেষে চূড়ান্ত রায় হয়েছে অ্যাপল বনাম স্যামসাংয়ের পেটেন্ট মামলায়। কপিরাইট মামলায় শেষ হাসি হাসলো মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল। মামলায় হেরে স্যামসাংয়ে এখন ক্ষতিপূরণ হিসেবে গুনতে হবে প্রায় ৯৩ কোটি ডলার।
মোবাইল ফোনবিষয়ক সাইট জিএসএমএরিনা জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া পেটেন্ট করা প্রযুক্তি অপব্যবহারের অভিযোগে ২০১২ সালে স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে অ্যাপলের করা মামলাটির শেষ রায় এসেছে ৬ মার্চ। মামলায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি মার্কিন বাজারে স্যামসাংয়ের একাধিক পণ্য নিষিদ্ধ করার দাবি করেছিল অ্যাপল। স্যামসাং পণ্য নিষিদ্ধ করার ওই দাবিতে সায় না দিলেও প্রতিষ্ঠানটিকে ৯২.৯৮ কোটি ডলার জরিমানা করেছে মার্কিন আদালত।
অ্যাপল বনাম স্যাসাংয়ের ওই বহুল আলোচিত মামলায় অ্যাপলের পক্ষে রায় দেন মার্কিন ফেডারেল জজ লুসি কোহ। মামলার প্রাথমিক রায়ে স্যামসাংকে ১০৫ কোটি ডলার জারিমানা করেছিল আদালত। ওই রায়ের বিপরীতে স্যামসাংয়ের করা আপিলের রায়ে ৯২.৯৮ কোটি ডলার জরিমানা নির্ধারণ করেন জজ লুসি কোহ।
স্যামসাংয়ের স্মার্টফোনগুলো চলে গুগল নির্মিত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে।
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে গুগল যখন মোবাইল ফোনের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ওএস প্রকাশ করে তখনও সে সময়ের গুগল সিইও এরিক স্মিড অ্যাপলের অন্যতম বোর্ড সদস্য ছিলেন। তখন অ্যাপল সিইও স্টিভ জবস অ্যান্ড্রয়েড ওএস প্রকৃতপক্ষে অ্যাপলের আইওএস-এর ‘কমপ্লিট রিপ-অফ’ বলে মন্তব্য করেছেন। স্টিভ জবস জিবদ্দশায় একাধিকবার বলেছেন, স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন পুরোপুরি আইফোনের আইডিয়া চুরি করে বানানো।
গুগল অ্যান্ড্রয়েড ওএস তৈরির এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এরিক স্মিডকে অ্যাপল বোর্ড ছাড়তে হয় এবং স্টিভ জবস পরবর্তীতে একাধিকবার এরিক স্মিডকে ‘অবিশ্বস্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
জীবনীলেখক ওয়াল্টার আইজ্যাকসন তার ‘স্টিভ জবস’ বইতে উল্লেখ করেছেন, জীবদ্দশায় স্টিভ জবস বলেছিলেন প্রয়োজনে তিনি অ্যান্ড্রয়েডের বিরুদ্ধে ‘থার্মেনিউক্লিয়ার ওয়ার’ শুরু করবেন এবং এজন্য অ্যাপলের (সে সময়ের) তহবিলে থাকা সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের শেষ পেনিটিও খরচ করবেন ‘অন্যায় ঠেকানোর জন্য’।
২০১১ সালের এপ্রিল মাসে অ্যাপল যখন পেটেন্টবিষয়ক মামলা করে, তখন পর্যন্ত বাজারে ছিল স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস২ ও সমসাময়িক স্মার্টফোন। ফলে, অ্যাপলের দাবি, এই রায়ে গ্যালাক্সি এস২ পর্যন্ত পেটেন্ট চুরির ক্ষতিপূরণ মিলছে এবং গ্যালাক্সি এস৩ ও গ্যালাক্সি এস৪ ও সমসাময়িক ফোনগুলোতে ব্যবহৃত পেটেন্টের ক্ষতিপূরণ ধরা হয়নি।
এর আগে আদালতের বাইরে আলোচনার টেবিলে বসেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি অ্যাপল ও স্যামসাং। আর গ্যালাক্সি এসথ্রি এবং সমসাময়িক একাধিক স্যামসাং পণ্য নিয়ে নতুন মামলার শুনানি শুরু হবে এই মাসেই।
স্যামসাং অ্যাপলের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে নতুন করে কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে শিগগিরই মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে না পারলে আবারও মার্কিন বাজারে বড় অংকের জরিমানার মুখে পরতে পারে স্যামসাং।