এশিয়া কাপ শ্রীলংকার
রফিকুল ইসলাম : এশিয়া কাপ জয়ে ভারতের রের্কডে ভাগ বসালো শ্রীলংকা। ভারত সর্বোচ্চ পাঁচবার এশিয়া কাপ জিতে এগিয়ে ছিল। ১২তম এশিয়া কাপের ফাইনালে গতকাল পাকিস্তানকে হারিয়ে পাচবার এশিয়া কাপ জয় করলো শ্রীলংকাও। শ্রীলংকা সর্বশেষ এশিয়া কাপ জয় করেছিল ২০০৮ সালে পাকিস্তানের মাটিতে। গতকাল জয় করলো বাংলাদেশের মাটিতে। পাকিস্তানের সামনে তিনবার এশিয়া কাপ জয়ের সুযোগ থাকলেও পাকিস্তান সেটা করতে পারেনি। কারণ ফাইনালে পাকিস্তান ৫ উইকেটে হেরে গেছে শ্রীলংকার কাছে। গতকাল ফাইনাল ম্যাচটা ঠিক যেন ফাইনালের মতো জমেনি। আর উত্তাপহীন ফাইনালে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে শ্রীলংকা। আগে ব্যাট করে পাকিস্তান ৫ উইকেটে করে ২৬০ রান। জয়ের জন্য শ্রীলংকার সামনে টার্গেট ছিল ২৬১ রান। শ্রীলংকা ৪৬.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৬১ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় ৫ উইকেটে। পাকিস্তানের পক্ষে ফাওয়াদ আলম সেঞ্চুরি করেও দলকে জয়ী করতে পারেননি। কিন্তু থিরিমান্নে সেঞ্চুরিসহ ১০১ রান করে দলকে জয়ী করেন। ফাইনাল ম্যাচে জয়ের জন্য শ্রীলংকার সামনে টার্গেট ছিল ২৬১ রান। ব্যাট করতে নেমে শ্রীলংকা ওপেনিং জুটিতেই করে ৫৬ রান। সাঈদ আজমলের বলে ৪২ রানে পেরেরার বিদায়ে ভাংগে ওপেনিং জুটি। পরের বলে সাঙ্গাকারাকে শূন্য রানে আউট করে আজমল হ্যাটট্রিক উইকেটের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু হয়নি। বরং থিরিমান্নে আর জয়াবর্ধনে ১৫৬ রানের জুটি করে দলকে ২১২ রানে পৌঁছে দেয়। বার বার চেষ্টা করেও এই জুটি ভাংতে পারেনি বোলাররা। ফলে এই জুটি দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। জয়াবর্ধনে ৭৬ বলে ৫ চার আর এক ছয়ে ফিফটি করার পর আউট হওয়ার আগে ৯৩ বলে ৯ চার আর এক ছক্কায় করেন ৭৫ রান। থিরিমান্নে ৫২ বলে ৮ চারে ফিফটি করার পর ১০৬ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি করেন। আর আউট হওয়ার আগে করেন ১০১ রান। তার সেঞ্চুরিতেই শ্রীলংকা পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজে জয় পায়। আগে ব্যাট করে পাকিস্তান যেমন বড় স্কোর করতে পারেনি। তেমনি বোলিংয়েই চমক দেখাতে পারেনি। আর পাকিস্তানের ফিল্ডিংটাও ছিল অনেকটা নড়বরে। ফলে ফাইনালে জয় পেতে তেমন কষ্ট করতে হয়নি লংকানদের। অধিনায়ক ম্যাথুস ১৬ রানে আর সিলভা ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে সাঈদ আজমল তিনটি আর জুনায়েদ ও তালহা একটি করে উইকেট নেন। ফাইনাল ম্যাচে আগে ব্যাট করে ফাওয়াদ আলমের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তান ৫ উইকেটে করে ২৬০ রান। দলের পক্ষে ফাওয়াদ সেঞ্চুরিসহ অপরাজিত ১১৪ রান, মিসবা উল হক ৬৫ রান আর ওমর আকমল ৫৯ রান করেন। ওপেনার শারজিল ৮ রান, শেহজাদ ৫ রান আর হাফিজ ৩ রানে আউট না হলে পাকিস্তানের স্কোরটা আরো বড় হতে পারতো। গতকাল ১৮ রানেই পাকিস্তান হারিয়েছিল প্রথম তিন উইকেট। সেখান থেকেই পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত করেছে ৫ উইকেটে ২৬০ রান। আর এটা সম্ভব হয়েছে ফাওয়াদ আলমের সেঞ্চুরিসহ ১১৪ রানের কারণেই। ব্যাট করতে নেমে মালিঙ্গা ঝড়ে দলীয় ৮ রানেই পাকিস্তান হারায় প্রথম উইকেট। দলীয় ১৭ রানে দ্বিতীয় আর ১৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। অধিনায়ক মিসবা আর ফাওয়াদ আলম মিলে ১২২ রানের পার্টনাশীপ গড়ে দলকে ১৪০ রানে নিয়ে যায়। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ফাওয়াদ আলম আরো একটি চমতকার পার্টনাশীপ গড়েন ওমর আকমলের সাথে। মাত্র ৭৮ বলে ১১৫ রানের পার্টনাশীপ গড়ে দলকে এই জুটি নিয়ে যায় ২৬০ রানে। ফাওয়াদ আলম ১৩৪ বলে ৮ চার আর ৩ ছক্কায় ১১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে ১২৬ বলে ৬ চার আর ৩ ছক্কায় করেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। শ্রীলংকার পক্ষে মালিঙ্গা ৫৬ রানে একাই নেন ৫ উইকেট। এ নিয়ে এশিয়া কাপে তৃতীয় বারের মতো এক ইনিংসে ৫ উইকেটে নিয়ে রেকর্ড করেন মালিঙ্গা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ২৬০/৫ (৫০ ওভার)
শ্রীলংকা : ২৬১/৫ (৪৬.২ ওভার)