ওয়াশিংটনে আটক অভিবাসীরা অনশনে
ভালো সুযোগ-সুবিধা এবং আমেরিকা থেকে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবিতে ওয়াশিংটনে আটককৃত অভিবাসীরা অনশন শুরু করেছেন। ওয়াশিংটনের টাকোমায় অবস্থিত অভিবাসী কেন্দ্রের সামনে শতাধিক অভিবাসী এই অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।
মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জিইও গ্রুপ পরিচালিত নর্থওয়েস্ট ডিটেনশন সেন্টারে আটকাবস্থায় বসবাসরত মোট এক হাজার তিনশ’ জন ব্যক্তির মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় ৭৫০ জন খাবার খেতে অস্বীকৃতি জানান। অবশ্য বিদ্রোহীদের আইনজীবীদের দাবি ৭৫০ জন নয়, অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা বিদ্রোহীদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার দুইশ’ জন। এদিকে, অনশনরত বিদ্রোহীরা খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। অনশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন শনিবার বিদ্রোহীদের পক্ষে তাদের আইনজীবী স্যান্ডি রেস্ত্রেপো জানান যে এই কর্মসূচি অন্তত পাঁচ দিন চলবে এবং এই সময়সূচি আরো দীর্ঘ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, ‘আটককৃত ব্যক্তিরাও মানুষ। তারা অপরাধী নয়, তাই ভালো সুযোগ-সুবিধা তাদের প্রাপ্য। আর প্রাপ্য অধিকার পাওয়ার জন্য তারা অনেক অপেক্ষা করেছে, আর অপেক্ষা করতে তারা পারছে না।’
তিনি জানান, মার্কিন অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করে যারা এই অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের দাবি হলো- ভালোমানের খাদ্য, মজুরি বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের ভালো ব্যবহার। আমেরিকার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা তথ্য ডিপার্টমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে আমেরিকা থেকে অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত এদের চার মাস আটক থাকার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সময় ধরে তাদের আটকে রাখা হয়। রেস্ত্রেপো জানান, তারই একজন মক্কেল প্রায় দু’বছর আটক থাকার পরে ছাড়া পেয়েছেন। তিনি জানান, আটককৃতদের অধিকাংশই মেক্সিকোর নাগরিক।
সিয়াটলভিত্তিক আইসিই’র মুখপাত্র অ্যান্ড্রু মুনোজ জানান, কোনোরকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজস্ব মতামত জানানোর অধিকার সকলেরই রয়েছে এবং আইসিই এই অধিকারবোধকে সম্মান জানায়।
এক বিবৃতিতে আইসিই’র তরফ থেকে জানানো হয় যে আটককৃত বিভিন্ন দেশের এই নাগরিকেরা যদি টানা ৭২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকেন তাহলে তারা অনশনে আছেন বিবেচনা করে অনশনরত বিদ্রোহীদের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে নেয়া হবে। এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে জিইও গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান। প্রসঙ্গত, কিছু আটককৃত ব্যক্তিকে বছরের পর বছর ধরে বিচ্ছিন্ন করে রাখার কারণে গত বছর ক্যালিফোর্নিয়ায় কয়েদীরা প্রায় দুই মাসের অনশনে গিয়েছিলেন। রাজ্যের নীতিনির্ধারকরা এই বিষয়ে বিবেচনা করবেন বলে রাজি হওয়ার পরে তারা এই অনশন কর্মসূচি গত সেপ্টেম্বর মাসে শেষ বলে ঘোষণা করেন।