যেসব স্টোডিয়ামে টি-২০ বিশ্বকাপ
টি-টোয়েন্টির বিশ্বকাপ শুরু হতে আর বাকি মাত্র ২ দিন। স্বল্প ওভারের এই ক্রিকেট দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী রবিবার ১৬ মার্চ কোয়ালিফায়িং রাউন্ডে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এবারের আসর। এর আগে ২০১২ সালে এ টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশ ছিল শ্রীলঙ্কা।
ক্রিকেটের এ জমজমাট আসরের আয়োজনের ভার পড়েছে দেশের তিনটি সেরা স্টেডিয়ামের ওপর। বিশ্বকাপে এ তিনটি স্টেডিয়ামের দিকেই নজর থাকবে কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর। এ তিনটি স্টেডিয়াম হলো : রাজধানীর মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম এবং সদ্যনির্মিত সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম। বলাই বাহুল্য, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে সিলেটের গ্রিন গ্যালারি স্টেডিয়াম।
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম মিরপুর স্টেডিয়াম নামেই সমাধিক পরিচিত। ২৬ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয় ২০০৬ সালে। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পর ২০০৭ সালের ২৫ মে সফরকারী ভারত ও স্বাগতিক বাংলাদেশের খেলার মধ্য দিয়ে স্টেডিয়ামটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর সফরকারী জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচের মধ্য দিয়ে স্টেডিয়ামটিতে এক দিনের আন্তর্জাতিক খেলার সূচনা হয়। সব ধরনের আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা থাকা স্টেডিয়ামটিতে ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের গ্রুপ পবের্র চারটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। কোয়ার্টার ফাইনালের দুইটি ম্যাচও এখানে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালে এশিয়া কাপের গ্রুপ পবের্র ছয়টি ম্যাচসহ ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় এ স্টেডিয়ামে। ফাইনালে স্বাগতিক বাংলাদেশ ২ রানে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মোট ৩৫টি ম্যাচের মধ্যে ফাইনাল, দুইটি সেমিফাইনালসহ ১৪টি ম্যাচ এ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
আইসিসির অনুমোদন পাওয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোর একটি হলো বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। সাবেক শ্রমমন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরীর নামানুসারে এ স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়। এর আগে এটি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। ২০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম হিসেবেও পরিচিত। স্টেডিয়ামটিতে ২০০৪ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। মূলত ওই বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যেই সংস্কার করা হয়েছিল মাঠটি। স্টেডিয়ামটি ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পায়। ২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগার দলের ম্যাচের মাধ্যমে এ স্টেডিয়ামের টেস্ট অভিষেক ঘটে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাগরিকায় অবস্থিত স্টেডিয়ামটির পাশেই উত্তাল বঙ্গোপসাগর। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বাধিক সংখ্যক ১৫টি ম্যাচ এ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে এ মাঠে গ্রুপ পবের্র দুইটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম। দুইটি পাতা একটি কুঁড়ির চা বাগানের সৌন্দর্য ঘেরা সবুজ চাদরে ঢাকা এ স্টেডিয়াম দেশের প্রথম গ্রিন গ্যালারি স্টেডিয়াম হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পবের্র ৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। চৌদ্দ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামটিতে প্রায় দেড় হাজার দর্শক গ্রিন গ্যালারির লালমাটির সবুজ ঘাসে বসেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা দেখার সুযোগ পাবেন। স্টেডিয়ামে সাধারণ আসন রয়েছে ১১ হাজার, ভিআইপি আসন ২১৭৫টি, অতিথি বঙ ২৫০টি, অতিরিক্ত অতিথি বঙ ১৬০টি। সবুজ বৃক্ষে ঢাকা চার ধাপের ছোট গ্যালারি, যেখানে গাছের ছায়ায় ও সবুজ ঘাসে বসে নেওয়া যাবে ব্যতিক্রমী ক্রিকেট আনন্দ। ৬১৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৮৫ ফুট প্রশস্ত নিয়ে এ ক্রিকেট মাঠটি দেশের অন্যতম বড় মাঠ। আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হলেও ইংল্যান্ড লায়ন্সের সঙ্গে বাংলাদেশ এ দল এবং ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ম্যাচ হয়েছে এ স্টেডিয়ামে। এ ছাড়া নারী ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও জাতীয় লিগের খেলাও হয়েছে এখানে। তবে, বিশ্বকাপের খেলা দিয়েই শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক ম্যাচের। আর ২১ মার্চ ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ আয়োজনের পর মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যেতে হবে গ্রিন গ্যালারি স্টেডিয়ামটিকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এ স্টেডিয়ামে।