ব্রিটিশ মায়েদের অভিনব প্রতিবাদ !
এমিলি শ্লগ(২৭) গত শুক্রবার তার আট মাস বয়সী শিশু মাটিলডাকে এক রেস্টুরেন্টে বসে দুধ খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় এক ফটোগ্রাফার তার একটি ছবি তুলেন এবং ফেসবুকে পোস্ট করে দেন। ছবির নিচে ফটোগ্রাফার যে মন্তব্য করেন তা ছিল রীতিমত অপমানজনক। তিনি লিখেছিলেন,‘ আপনার বাচ্চাটি ব্রেস্টফিডিং করে এটা ঘটা করে শহরবাসীকে দেখানোর প্রয়োজন নেই। অসহ্য!’
এ ঘটনায় ক্ষেপেছেন ব্রিটিশ মায়েরা। এর প্রতিবাদে শনিবার তারা গোটা দেশ জুড়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের বিক্ষোভটি ছিল অভিনব। হাজার হাজার ব্রিটিশ নারী বিভিন্ন শহরের সড়কগুলোতে প্রকাশ্যে বসে বাচ্চাদের দুধ পান করান। স্ট্যাফোর্ডশায়ার কাউন্টিতে বিক্ষোভে জড়ো হয়েছিল প্রায় এক হাজার মা।
আর নিউক্যাসল শহরের ফুটপাতে বসে বাচ্চাদের দুধ খাওয়াচ্ছিলেন প্রায় ৫০ জন নারী। এদেরই একজন হলেন জেনেট মরফি। ফেসবুকে প্রকাশিত ছবি ও মন্তব্য সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে ৩২ বছরের মরফি বলেন,‘সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকে ব্রেস্টফিডিংয়ের জন্য নারীদের বিরুদ্ধে অপমানজনক প্রচারণা চালানো হয়েছে। আমরা সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই, শিশুদের ব্রেস্টফিডিং করানো নারীদের একটি সহজাত এবং প্রাকৃতিক বিষয়।একজন মা যেখানে খুশি সেখানে বসে তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে পারেন এবং এটি তার সমাজ স্বীকৃত অধিকার।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ নিয়ে কেউ আমার সমালোচনা করলে আমি বলবো, আপনাদের এটি সহ্য করতে হবে। কারণ এটি কোনো যৌন ক্রিয়ার মত বিষয় নয়। আমি আমার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াবো এতে অন্যের লজ্জা পাওয়ার কি আছে।’ এ ধরনের অপপ্রচার নতুন মায়েদের ব্রেস্টফিডিংয়ে নিরুৎসাহিত করবে বলেও তিনি মনে করেন।
স্ট্যাফোর্ডশায়ারে ট্রেজার চেস্ট নামের একটি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ব্রেস্টফিডিংয়ের পক্ষে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান ক্যাথারিন ওডম বলেন, ‘অনেক নতুন মা এ ঘটনায় বাচ্চাকে প্রকাশ্যে দুধ খাওয়াতে দ্বিধা করবেন। আমরা আশা করবো মায়েরা যাতে তাদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হয়। কারণ এটি তাদের আইন স্বীকৃত ন্যায্য অধিকার।’ ট্রেজার চেস্টের মতো ব্রিটেনের বহু সংগঠন নারীদের ব্রেস্টফিডিংকে সমর্থন জুগিয়ে থাকেন। নারীদের জন্য প্রকাশ্যে ব্রেস্টফিডিংকে সমর্থন করে ২০১০ সালে ব্রিটেনে ইকুয়েলিটি অ্যাক্ট প্রবর্তন করা হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার অনলাইনের স্পটেড রুগলে নামক সাইটে স্তনদানরত মায়ের ছবিটি প্রকাশিত হয়। তবে যে ফটোগ্রাফার ছবিটি তুলেছিলেন তার নাম এখনো জানা যায়নি। এ ছবি প্রকাশিত হওয়ায় গোটা যুক্তরাজ্যে সমালাচনার ঝড় বয়ে যায়। অবশ্য এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে সাইটটি।