ব্রিটেনে বিচারকের পদে প্রথম বাংলাদেশি স্বপ্নারা
সাইফুর তালুকদার: ব্রিটেনের সার্কিট জজ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সিলেটের স্বপ্নারা খাতুন। ব্রিটেনে বিচারক পদে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি নিয়োগ পেলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্রিস গ্রেলিংগ-লর্ড চ্যান্সেলরের সুপারিশের ভিত্তিতে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্যারিস্টার স্বপ্নারা খাতুনকে ব্রিটেনের সার্কিট জাজ হিসেবে নিয়োগ দেন। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে।
সিলেটের বিয়ানীবাজারের আদি নিবাস স্বপ্নারা খাতুন পেশায় একজন ব্যারিস্টার। তার বাবার নাম মিম্বর আলী, তিনি প্রয়াত। ফ্যামিলি ল, ডোমেস্টিক ভায়োল্যান্স ল বিষয়ে এক্সপার্ট স্বপ্নারা লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস থেকে এলএলবি পাশ করেন। এর পর ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইনের উপর প্রফেশনাল ডিগ্রী লাভ করেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল থেকে লর্ড চ্যান্সেলর কর্তৃক স্বপ্নারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে একজন ফ্যামিলি এক্সপার্ট হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের জাস্টিস ডিপার্টম্যান্টকে পরামর্শ দান করেছেন। ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি ফ্যামিলি বার এসোসিয়েশনের কমিটি মেম্বার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ফ্যামিলি জাস্টিস কাউন্সিল ছাড়াও ফোর্স ম্যারিজের উপর একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। লন্ডনের বিখ্যাত বার কোরাম চেম্বারের একজন নিয়মিত ব্যারিস্টার স্বপ্নারা খাতুন “রিপ্রেজেন্টিং এশিয়ান ফ্যামিলিজ ইন দ্য ফ্যামিলি কোর্ট” শিরোনামে বই লিখেছেন।
উল্লেখ্য সার্কিট জাজ পদবী ব্রিটেনে ডিস্ট্রিক্ট জাজ এর উপরে এবং পরবর্তী পদোন্নতিতে তিনি হাই কোর্টের জাজ হতে পারেন।
২০১২ সালের ৯ এপ্রিল ব্রিটেনের গার্ডিয়ানে আশিয়ানা নেটওয়ার্কের একজন চেয়ার হিসেবে আয়শা গিল এর সাথে যৌথভাবে ফোর্স ম্যারিজ নিয়ে তার লিখিত উপস্থাপনা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিখ্যাত ব্লাক লেটার ল পেপারে স্বপ্নারা সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি সাউথ এশিয়ান ছাড়াও ইরানীয়ান ও তার্কিশ মহিলাদের উপর ফোর্স ম্যারেজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। ২০১২ সালে ব্রিটিশ পাওয়ার ১০০ এর একজন প্রভাবশালীর ব্রিটিশ বাংলাদেশের তালিকায় স্থান করে নেন।
ব্যারিস্টার স্বপ্নারা খাতুনের চাচাতো ভাই প্রবাসী ছরওয়ার হোসেন বলেন, ব্রিটেন প্রবাসীদের অধিকাংশরাই শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে স্বপ্নারা খাতুনদের মতো উচ্চ শিক্ষিতরা সেদেশের উচ্চ পর্যায়ে অবদান রেখে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করছেন। তাঁর এ পদোন্নতির খবর শুনে শুধু আমাদের পরিবার নয় ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশীরা বিভিন্নভাবে আনন্দ উদযাপন করেছেন।