ক্রিমিয়ায় গণভোট

রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন

Crimeanবর্তমান দেশ ইউক্রেইনের সঙ্গে থাকবে না পূর্ববর্তী দেশ রাশিয়ায় ফিরে যাবে, এ প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে ইউক্রেইনের রুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল ক্রিমিয়ায় অধিবাসীরা নিরঙ্কুশভাবে রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। ইউক্রেইনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে জনমত যাচাইয়ে রোববার এই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়।
৯৬ শতাংশ ভোটার ইউক্রেইন ছেড়ে রাশিয়ায় যোগ দেয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে বলে ক্রিমিয়ার রুশপন্থী নেতারা ঘোষণা করেছেন।
তিন-চতুর্থাংশ ভোট গণণা শেষে ক্রিমিয়ার প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা মিখাইল মালিশেভের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটার রাশিয়ায় যোগ দেয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
গণভোটে ২০ লাখ অধিবাসীর ক্রিমিয়ার ৮৩ শতাংশ মানুষ তাদের মতামত জানিয়েছে, বলেছেন মালিশেভ।
এই ফলের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ক্রিমিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি তিনি সম্মান জানাবেন।
এর আগে বুথফেরত জরিপেও একই আভাস পাওয়া গিয়েছিল। বার্তা সংস্থা রিয়া বুথ ফেরত জরিপের ফল প্রকাশ করে জানায়, ক্রিমিয়ার ৯৩ শতাংশ ভোটারই রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এই ভোটে ভোটারের এ উপস্থিতি রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ক্রিমিয়ায় যোগ্য ভোটারের সংখ্যা ১৫ লাখ।
ভোটে ব্যালট পেপারে দুটো প্রশ্ন রাখা হয়, প্রথমত, ক্রিমিয়া রাশিয়ায় যোগ দেবে কিনা। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেইনের ১৯৯২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া উচিত কিনা। যে সংবিধান অনুযায়ী ক্রিমিয়া আরো বেশি স্বায়ত্তশাসন পাবে।
এই গণভোটকে “অবৈধ” দাবি করে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেইন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলে রাশিয়ার বিপক্ষে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার গণভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই ক্রিমিয়ার রাজধানী সিমফেরোপলে রুশপন্থীদের উৎসব শুরু হয়ে যায়। সিমফেরোপলের লেনিন স্কয়ারে ব্যান্ডের তালে তালে জনতা রাশিয়ার পতাকা নাড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকে।
“পুতিন দীর্ঘজীবী হোক, সে সেরা, সেরা প্রেসিডেন্ট!” আতশবাজির আলোর ঝলকানির মধ্যে চিৎকার করে ওঠেন ৫২ বছর বয়সী ওলেগা পেলিকোভা।
তার আশপাশের ক্রিমীয়রা বলেন, তারা আশা করছেন রাশিয়ার অংশ হয়ে তারা ইউক্রেইনের দুই দশকের অস্থিরতা ও দুর্নীতি থেকে মুক্তি পাবেন।
দুই সপ্তাহ আগে রুশ সেনারা ক্রিমিয়া উপদ্বীপে অবস্থান নেয়ার পর ক্ষমতা গ্রহণ করা আঞ্চলিক প্রধানমন্ত্রী সের্গেই আকশিয়নোভ গণভোট অনুষ্ঠানে সমর্থন দেয়ার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
সোমবার ক্রিমিয়ার আঞ্চলিক জাতীয় পরিষদ ক্রিমিয়াকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর এই পরিকল্পনা নিয়ে আকশিয়নোভ মস্কো যাবেন।
তবে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে এখনই ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ করার পদক্ষেপ নাও নিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাই চূড়ান্তভাবে কবে ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেবে সেই সময়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
অঞ্চলটির জাতিগত রুশ জনগোষ্ঠী ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশ। তাদের বেশিরভাগই রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে ভোট দেবে বলে ধারণা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্ররা এই গণভোটকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়েছে। তাদের আপত্তি উপেক্ষা করেই হয় এ গণভোট।
অন্যদিকে, রাশিয়া বলছে, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী, এ গণভোট সম্পূর্ণ বৈধ।
শনিবার এ গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button